নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: রামরঞ্জন দত্ত, ভোটার কার্ড অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বয়স ৯২। দেখে মনে হবে সবেমাত্র সত্তরের ঘরে ঢুকেছেন। চটপটে, এনার্জিতে ভরপুর এই বৃদ্ধ খান একবেলা। একবেলা খেয়েই বয়সকে হার মানিয়ে পুরোদমে করছেন জীবনযাপন। বাঁকুড়ার এই বৃদ্ধ ভারতের স্বাধীনতার আগের এবং পরের দুই পরিস্থিতিই দেখছেন। দেখেছেন কী ভাবে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে দেশের রূপ। কী ভাবে উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে দুর্নীতি এবং ভেজাল। বর্তমান সময়ে যখন চারিদিকে ভেজাল, তখন কী ভাবে সুস্থ ভাবে লম্বা জীবনযাপন করতে হয় তার জ্বলন্ত উদাহরণ তিনি। নব্বই ঊর্ধ্ব বাসিন্দা চাক্ষুষ দেখেছিলেন নেতাজিকে।
কী ভাবে আয়ু বাড়ানো যায়? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, খাবারই হল বিষ। যত কম আহার, তত বেশি আয়ু। নিজে এক বেলাই খান। প্রায় ৪০-৫০ বছর ধরে একবেলা খেয়েই রয়েছেন তিনি। নিজের কাজ নিজেই করেন। দরকার পড়লে হেঁটে যান সব জায়গায়। পরনে ধুতি আর পাঞ্জাবি। এই বৃদ্ধই যেন সাধারণ যাপনের মূর্ত প্রতীক। কানে একটু কম শোনেন, চোখে ছানি থাকলেও, গরগর করে পড়তে পারেন বই। এই কিছুদিন আগেই কাছাকাছি এক গণেশ পূজার উদ্বোধন করেন তিনি। গিয়েছিলেন হেঁটেই। একসময় ছাতনা থেকে বাঁকুড়া শহর সিনেমা দেখার জন্য হেঁটেই যাতায়াত করতেন তিনি। ছাতনা থেকে বাঁকুড়া শহরের দূরত্ব কমপক্ষে ১০ কিলোমিটার।
আজকাল অর্থের জন্য অনেকেই নিজের স্বাস্থ্যকে বঞ্চিত করেন। তার সঙ্গে রয়েছে মানসিক চাপ এবং মানসিক অবসাদ। বর্তমান যুগে সব কিছুই একটি বোতাম টিপলেই হয়ে যায়। যার ফলে কমে গিয়েছে অ্যাকটিভিটি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শরীর। বাসা বাঁধছে রোগ, কমছে আয়ু। কিন্তু রামরঞ্জনবাবুকে দেখলে বোঝা যায় আগেকার দিনে আর্থিক প্রাচুর্য্য এবং সুযোগ সুবিধা না থাকলেও, ছিল খাটার মানসিকতা। সেই কারণেই হয়তো বাঁকুড়ার এই বৃদ্ধ হার মানিয়েছে বয়সকেও।