কলকাতা: রামপুরহাটের বগটুইতে গিয়েই স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ঠিক দু’ঘণ্টার মধ্যে মোবাইল টাওয়ার লোকশনের সূত্র ধরে তারাপীঠ থেকে ধরা পড়ল আনারুল। গত দুদিন ধরে সংবাদের শিরোনামে বগটুই গ্রামের নৃশংস ‘হত্যাকাণ্ড’।অভিযোগ তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখের খুনকে কেন্দ্র করে অশান্তির সূত্রপাত। গত সোমবার ভাদুকে বোমা মেরে খুনের পর ওই গ্রামে পরপর বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয়। পুড়ে মারা যায় নারী শিশু-সহ ৮ জন।
বৃহস্পতিবার এই গ্রামেই গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, ব্লক সভাপতি হওয়ার দরুণ প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে ওঠাবসা রয়েছে আনারুলের। অগ্নিকাণ্ডের সময় আত্মীয়দের প্রাণে বাঁচানোর আর্তি জানিয়ে অনেকেই ফোন করেন আনারুলকে। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি। এমনকি পুলিশকেও বিষয়টি জানাননি তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন পুলিশের কাজ নিয়ে যেমন প্রশ্ন তোলেন তেমনই আনারুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আনারুলকে হয় আত্মসমর্পণ করতে হবে, নইলে গ্রেফতার করবে পুলিশ।মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিতেই বৃহস্পতিবার দুপুরে আনারুলের বাড়িতে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। সেখানে মহিলা ও শিশুদের নীচের তলায় এনে গোটা বাড়ি প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালায় তারা। ওদিকে বাড়ির বাইরে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আনারুলের অনুগামীরা। তাঁদের দাবি, আনারুলকে ফাঁসিয়েছে অনুব্রত মণ্ডল।এদিকে গ্রেফতারির নির্দেশ জানার পরই গা ঢাকা দেয় আনারুল। শেষ পর্যন্ত তারাপীঠে একটি হোটেলের কাছ থেকে আনারুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, পেশায় রাজমিস্ত্রি আনারুল ২০১১ সাল থেকে ঠিকাদারি শুরু করেন। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুরু হয় তাঁর রাজনৈতিক উত্থান। সম্প্রতি তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলে রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি নিযুক্ত হন তিনি।গ্রেফতারের পর ব্লক সভাপতির পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে আনারুলকে। তাঁর জায়গায় আনা হয়েছে সৈয়দ সিরাজ জিম্মিকে। তিনি তৃণমূলের বীরভূম জেলা কমিটির সদস্য।