টাকা খরচে শুধু নজর নয়, খতিয়ে দেখা হবে কাজের মানও, বার্তা রাজভবনের

এবার আর শুধু টাকার খরচের হিসেব নয়। নজর দেওয়া হবে রাজ্যের পঞ্চায়েতগুলির কাজের গুণগত মানের ব্যাপারেও। আর এই মান সঠিক রয়েছে কি না তা আরও বেশি করে নজরদারির প্রয়োজন বলে মনে করে রাজভবন। সোমবারই রাজ্যের পঞ্চম অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের হাতে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দেন। কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে রাজ্যপাল ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পরেই রাজভবন নজরদারি প্রসঙ্গে নিজের মনোভাব জানান। রাজ্যপালের কাছে কমিশনের চেয়ারম্যান ব্যাখ্যা করেন, সবসময়ে আর্থিক খরচই উন্নয়নের যথাযথ মাপকাঠি হয় না। দেখতে হবে, তা কতটা সঠিক ভাবে খরচ হয়েছে। গুণগত মান কেমন। এ সব নিয়েই রাজ্যস্তরের অডিটের প্রয়োজন। কমিশনের বক্তব্য, একটি রাস্তা তৈরির সময়ে এক ইঞ্চি পিচ পড়তে পারে। আবার তিন ইঞ্চি পিচ পড়তে পারে। দু’টি ক্ষেত্রে গুণগত মান এক হবে না। তাই আর্থিক মাপকাঠির সঙ্গে গুণগত মানের মাপকাঠি নিয়েও অডিট করা প্রয়োজন।

এরপরই রাজভবনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজ্যপাল ও অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যানের আলোচনায় বেশ কয়েকটি বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। যেমন, কমিশনের সুপারিশমতো বরাদ্দ অর্থ পঞ্চায়তের হাতে তুলে দিলেই ক্ষান্তি দিলে হবে না। এর পাশাপাশি তিন মাস অন্তর তা কতটা খরচ হলো, তা-ও নজরদারি করতে হবে। গুণগত মান বাড়াতে হবে সোশ্যাল অডিটের। এ ক্ষেত্রে স্বাধীন কোনও সংস্থাকে এই অডিটের দায়িত্ব দেওয়া উচিত। অডিটের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার কী হবে, তা-ও স্থির করে দিতে হবে। কাজের মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও স্বশাসিত সংস্থাকে সামনে রাখা যেতে পারে। একইসঙ্গে এদিনের বৈঠকে এও বলা হয়, পঞ্চায়েতের সুশাসনের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপুঞ্জের যে মাপকাঠি ভারত সরকার মেনে নিয়েছে, তা গ্রহণ করা যেতে পারে। আর তা আরও সূদৃঢ় করতে কাজের নিরিখে পঞ্চায়েতগুলির রিপোর্ট কার্ড চালুর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যেখানে কাজের গুণগত মান ও কর্মদক্ষতার নিরিখে বিচার করে সাধারণ মানুষ এই রিপোর্ট কার্ড দেবেন। আর এই রিপোর্টের ভিত্তিতে পঞ্চায়েতগুলির জন্য ইনসেনটিভ স্কিম দেওয়া যেতে পারে বলেও বৈঠকে আলোচনা করা হয় বলে রাজভবন সূত্রে খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − 3 =