পশ্চিমবঙ্গের রেল প্রকল্পগুলির অগ্রগতি সম্পর্কে রাজ্যসভায় জানালেন রেলমন্ত্রী

কলকাতা : শুক্রবার রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ মৌসম বি নূরের একটি লিখিত প্রশ্নের জবাবে, পশ্চিমবঙ্গের জন্য ১৪,০০০ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দসহ বিশদ তথ্য-সহ জানালেন রেল, তথ্য ও সম্প্রচার এবং বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো জানিয়েছে, মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যগুলোর মধ্যে আছে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ।

১) জুন ২০২৫-এ ঘোষিত নিউ জলপাইগুড়ি-কলকাতা করিডোর উন্নয়ন

২) চিকেনস নেকে চার লাইনের রেল প্রকল্পের অগ্রগতি,

৩) ১৯০ কিমি যোগবনি (বিহার) – বিরাটনগর – নিউ মাল জংশন (পশ্চিমবঙ্গ) রেলপথের চূড়ান্ত সমীক্ষার অবস্থা ও জমি অধিগ্রহণের সম্ভাব্য ব্যয়,

৪) সেবক-রংপো ব্রডগেজ লাইনের জন্য বন দপ্তরের ছাড়পত্র এবং দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় বনসৃজনের অগ্রগতি,

৫) পশ্চিমবঙ্গে অনুমোদিত গতি শক্তি মাল্টিমোডাল কার্গো টার্মিনালগুলির সংখ্যা ও সেগুলির চালু হওয়ার সম্ভাব্য সময়সূচি।

নিউ জলপাইগুড়ি-কলকাতা করিডোর উন্নয়নের জন্য অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ:

1. আলুয়াবাড়ি – নিউ জলপাইগুড়ি তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন (৫৭ কিমি)

2. আলুয়াবাড়ি – ঠাকুরগঞ্জ ডাবলিং (২০ কিমি)

নতুন সমীক্ষার মাধ্যমে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির জন্য অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ:

1. মালদা টাউন – কুমেদপুর তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন (৬১ কিমি)

2. কুমেদপুর – আলুয়াবাড়ি তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন (১১৬ কিমি)

3. ঠাকুরগঞ্জ – শিলিগুড়ি ডাবলিং (৫৭ কিমি)

মন্ত্রী বলেন, বিস্তারিত প্রকল্প প্রতিবেদন চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রকল্প অনুমোদনের জন্য রাজ্য সরকার, অন্যান্য অংশীদারদারদের সঙ্গে আলোচনা এবং নীতি আয়োগ ও অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদন প্রয়োজন। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই নির্দিষ্ট সময়সীমা বলা সম্ভব নয়।

বাজেট বরাদ্দ (পশ্চিমবঙ্গে):

* ২০০৯-২০১৪: ₹৪,৩৮০ কোটি / বছর

* ২০২৫-২৬: ₹১৩,৯৫৫ কোটি (৩ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি)

সদ্য সম্পন্ন প্রকল্পসমূহ:

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রকল্পের নাম, দৈর্ঘ্য ও খরচের বিবরণ দেওয়া হয়েছে (যেমন: লালগোলা-জিয়াগঞ্জ, কৃষ্ণনগর-বেথুয়াডহরি, নিউ কোচবিহার-গুমানিহাট ইত্যাদি)।

চলতি প্রকল্পসমূহের তালিকা:

উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নবদ্বীপঘাট-নবদ্বীপধাম, দেশপ্রাণ-নন্দীগ্রাম, তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর, কাহালগড়-আদিত্যপুর ইত্যাদি।

জমি অধিগ্রহণের অবস্থা:

* মোট প্রয়োজনীয় জমি: ৪৫৬৪ হেক্টর

* অধিগৃহীত জমি: ১০৯৪ হেক্টর (২৪%)

* বাকি জমি: ৩৪৭০ হেক্টর (৭৬%)

জমি অধিগ্রহণের কারণে বিলম্বিত প্রকল্পসমূহের উদাহরণ:

* নবদ্বীপঘাট-নবদ্বীপধাম: ১০৬.৭১ হেক্টর জমি, অধিগ্রহণ হয়নি

* সাঁইথিয়ায় বাইপাস (৫ কিমি): ২২.২৮ হেক্টর জমি, অধিগ্রহণ হয়নি

* দেশপ্রাণ-নন্দীগ্রাম: ৭৮.৫১ হেক্টর জমি, অধিগৃহীত ৬৫.৯৬ হেক্টর, বাকি ১২.৫৫ হেক্টর

মোট অনুমোদিত প্রকল্প (১ এপ্রিল, ২০২৫ পর্যন্ত):

* মোট প্রকল্প: ৪২টি (নতুন লাইন ১২, গেজ পরিবর্তন ৪, ডাবলিং/মাল্টিট্র্যাকিং ২৬)

* মোট দৈর্ঘ্য: ৪,৪০২ কিমি, ব্যয় হবে ৬৭,৯৯১ কোটি টাকা

* সম্পন্ন: ১,৭০২ কিমি

* মোট ব্যয় (মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত): ₹২৩,৪১০ কোটি

আন্তর্জাতিক প্রকল্প:

* যোগবানি-বিরাটনগর (নেপাল) (১৯ কিমি): নির্মাণাধীন

* বিরাটনগর-নিউ মাল জংশন (১৯০ কিমি): এফএলএস অনুমোদিত

সেবক-রংপো প্রকল্প:

* দৈর্ঘ্য: ৪৪ কিমি (৩৯ কিমি সুড়ঙ্গ)

* প্রকল্প খরচ: ₹১১,৯৭৩ কোটি

* খরচ হয়েছে (মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত): ₹৮,৩৫৮ কোটি

* ২০২৫-২৬ সালের বরাদ্দ: ₹২,৯৪০ কোটি

* ইতিমধ্যে ৩২ কিমি সুড়ঙ্গ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে

উল্লেখযোগ্য সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে: হিমালয় সংলগ্ন অঞ্চলে নির্মাণ; ভূতাত্ত্বিক ও ভূসংস্থানগত সমস্যা, বন দপ্তরের অনুমোদন ইত্যাদি।

গতি শক্তি মাল্টিমোডাল টার্মিনাল (জিসিটি):

* সম্পন্ন: ৩টি

* অনুমোদিত: ২১টি

* চালু হওয়ার সময়সীমা: ইএসপি অনুমোদনের ২৪ মাসের মধ্যে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty + 12 =