ব্যারাকপুর:সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই ভোগান্তির শিকার রেল যাত্রীরা। ফুট ওভারব্রিজ সম্প্রসারনের দাবিতে ব্যারাকপুর স্টেশন সংলগ্ন ১৪ নম্বর রেল গেটের সামনে রেল অবরোধ করল বিক্ষোভ নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চ। রেল অবরোধের জেরে শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর মেইন শাখায় ট্রেন চলাচল স্তব্ধ হয়ে পড়ে। এদিন সকাল ৮-৪৫ মিনিট থেকে রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চের সদস্যরা। সেই অবরোধের সামিল হন ব্যারাকপুরের বাসিন্দারা। লিখিত আশ্বাস না মেলা পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাবার হুঁশিয়ারি দেন অবরোধকারীদের।
স্থানীয়রা জানান, ২০২০ সালে আমফান ঝড়ে ব্যারাকপুর রেলস্টেশনের মাঝখানে থাকা পূর্ব পাড়ের সঙ্গে পশ্চিম পাড়ের যোগাযোগকারী ফুট ওভারব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তারপর রেলের তরফে ব্রিজটি মেরামতিও করা হয়েছিল। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে দু-নম্বরের সঙ্গে এক নম্বরের যোগাযোগের ব্রিজের অংশ কেটে ফেলা হয়। ফুট ওভারব্রিজ সম্প্রসারনের দাবিতে রেল প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকে বসেন ব্যারাকপুর শাখার নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চ। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষের তরফে আশ্বাস না পেয়ে ১৭ জুলাই রেল অবরোধ কর্মসূচির কথা তারা আগাম জানিয়ে দেন। পূর্ব ঘোষিত অনুযায়ী এদিন ১৪ নম্বর গেটে অবরোধে নামে নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চ।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে রেল অবরোধের জেরে চরম ভোগান্তির শিকার অফিস যাত্রী থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা। টানা দু-ঘণ্টা ধরে চলে রেল অবরোধ। অবশেষে রেল কর্তৃপক্ষের তরফে লিখিত আশ্বাস পেয়ে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। বিক্ষোভকারী সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের সংযোগকারী ফুট ওভারব্রিজটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবিতে এই রেল অবরোধ। রেল প্রশাসনের কাছে একাধিকবার স্মারকলিপি জমা দেওয়া সত্ত্বেও সুরাহা মেলেনি। নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চের সদস্য অজিত কুণ্ডু বলেন, ২ নম্বর থেকে এক নম্বর পর্যন্ত কেটে ফেলা ব্রিজের সম্প্রসারনের দাবিতে তিন বছর ধরে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এক বছর আগে শিয়ালদহ ডিআরএম ব্রিজ গড়ার আশ্বাস দিলেও, একচুল কাজ এগোয়নি। অজিত বলেন, গত ১৪ ও ১৬ জুলাই রেল প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত মেলেনি। এদিনও অবরোধের আগে তারা রেল প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। কিন্তু তারা কোনও সদুত্তর পাননি। বাধ্য হয়ে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন।
ব্যারাকপুরের বাসিন্দা সুনন্দা দে জানান, দীর্ঘদিনের সমস্যা। ব্রিজ না থাকায় তাদের নিত্যাদিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। ব্যারাকপুর শাখার নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চের সদস্য অরুণকুমার ঘোষ জানান, ফুট ওভার ব্রিজ সম্প্রসারনের জন্য গণ স্বাক্ষর সম্মিলিত চিঠি রেল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রেলের তরফে কোনও সদুত্তর মেলেনি। এদিন রেল প্রশাসন লিখিতভাবে দু-তিন মাসের মধ্যে রেল ওভার ব্রিজটি পুনর্গঠনের আশ্বাস দেন। কিন্তু অবিলম্বে ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু না হলে ফের তারা রেল অবরোধে সামিল হবেন।