আরামবাগ শহরজুড়ে দলছুট হাতির তাণ্ডব, ১৪৪ ধারা জারি প্রশাসনের

সাত সকালেই গজরাজের দেখা হুগলির আরামবাগ শহর সংলগ্ন কালীপুরে। আতঙ্কিত হয়ে মানুষ ছোটছুটি শুরু করে। হাতির তাণ্ডবে দুই জন গুরুতর আহত হয়। শহরের মধ্যে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর হওয়ার পাশাপাশি দুটি মোটর বাইক ভাঙচুর হয়। সাধারণ মানুষের স্বার্থে আরামবাগ শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। এমনকী, আরামবাগ শহররের সবজি বাজারে তাণ্ডব চালায় দাঁতালটি। হাতির তাণ্ডবে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে মিলন ফটিক নামে এক সবজি বিক্রেতা এবং একজন হুলা পার্টির একজন কর্মীর পা ভেঙে যায়। জানা গিয়েছে, দল ছুট হয়ে মেদিনীপুরের জঙ্গল থেকে সারারাত হাঁটার পর আরামবাগের লোকালয়ে ঢুকে পড়ে দাঁতাল হাতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের দিক থেকে গোঘাট হয়ে আরামবাগে ঢুকে পরে দাঁতাল। বর্তমানে আরামবাগের কালীপুরের একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বনদপ্তরের কর্মীরা পৌঁছয়। তবে এই ভাবে হঠাৎ লোকালয়ে হাতি দেখে আতঙ্কিত হয় এলাকার মানুষ। সাত সকালেই মাঠে কৃষি জমি দেখতে গিয়ে হাতি দেখতে পায় সাধারণ মানুষ। তখনই গ্রামের মানুষদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। ব্যাপক ফসল নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি এলাকার মানুষের। তবে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে বলে অনুমান। পাশাপাশি দাঁতালের সঙ্গে আরোও একটি বাচ্চা হাতি রয়েছে বলে অনুমান বনদপ্তরের। হাতিটিকে আয়ত্ত্বে আনতে বাঁকুড়ার হুলা পার্টি, মেদিনীপুরের বনকর্মী ও ইস্টার্ন জোনের ফরেস্ট আধিকারিক অশোক সিং-সহ অন্যান্য অফিসার, আরামবাগের এসডিপিও অভিষেক মণ্ডল, এসডিও সুভাষীনিই সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এই বিষয়ে আরামবাগ চাঁদুর ফরেস্টের রেঞ্জার আসরাফুল ইসলাম বলেন, এখনও পর্যন্ত যেটা জানা যাচ্ছে, একটা বড় হাতি এবং একটা বাচ্চা হাতি রয়েছে। সকালে খবর পেয়েই আরামবাগ থানার পুলিশ ও আরামবাগ রেঞ্জের কর্মচারীরা রয়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের করণীয় হল জনগণকে কন্ট্রোল করা। বনবিভাগের উচ্চ স্তরে খবর দেওয়া হয়েছে। বিষ্ণুপুর থেকে হুল্লাপার্টি আসবে এবং অন্যান্য রেঞ্জের অফিসার এলে আলোচনা করে ঠিক করা হবে এই দুটি হাতির অভিমুখ কোন দিকে হবে। অপরদিকে আরামবাগের এসডিপিও অভিষেক মণ্ডল জানান, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে কালীপুর-সহ আরামবাগ শহর ও গোঘাটের কিছুটা অংশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয় হাতিটিকে নির্দিষ্ট জঙ্গলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বনদপ্তরের অফিসাররা কাজ করছেন। আমরাও পুলিশের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করছি।
অপরদিকে স্থানীয় মানুষ চন্দন মালিক জানান, সকালেই খবর পেলাম হাতি এসেছে। স্থানীয় লোকেরা তাণ্ডব করায় হাতিও জঙ্গল থেকে বের হচ্ছে আবার ঢুকে যাচ্ছে। তবে বিরক্ত হয়ে মানুষকে তাড়াও করছে। এবার দ্বারকেশ্বর নদী পেরিয়ে এবার দাঁতাল হাতি শহরে ঢুকে পড়ে। শহরে ঢুকেই হাতির তাণ্ডব চলে বাজার জুড়ে। দুটি বাইক ভাঙচুর করার পাশাপাশি একজন হুলা পার্টিকে আহত করে দাঁতালটি। জানা গিয়েছে, আরামবাগ শহরের সদরঘাটের বাজারে ভিতরে হাতি তাণ্ডব শুরু করায় শহরজুড়ে সাধারণের যাতায়াত নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। পুলিশ প্রশাসন হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। কিন্তু গজরাজ নিজের মতো করে বাড়ি ভাঙচুর ও বাইক ভাঙচুর করে পালায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আরামবাগ শহরে তাণ্ডব চালানোর পর হাতিটি গোঘাটের তেলিগ্রামের দিকে চলে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − fifteen =