মহালয়া শুনতে প্রযুক্তির যুগে কদর হারিয়েছে রেডিও

পাণ্ডবেশ্বর: আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটাদিন, তারপরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। সারা দেশের পাশাপাশি বিদেশেও দুর্গা পুজাে হয় মহা ধুমধামের সঙ্গে। আপামর বাঙালি এই দুর্গাপুজোর জন্য সারা বছর দিন গোনেন। দুর্গাপুজো মানেই কাশ, শিউলি ফুলের সমাগম। দুর্গাপুজোর আগেই শুরু হয় নতুন শিশির পড়া। প্রকৃতি এক অন্যরূপে সজ্জিত হতে থাকে মায়ের আগমনী বার্তা দিতে। দুর্গাপুজো মানেই রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহালয়া শোনা।
বর্তমানে সমাজ অনেক এগিয়েছে প্রযুক্তিবিদ্যায়, ভুলে গিয়েছে রেডিওর কথা। একটা সময় ছিল যে সময় ঠিক পুজোর আগেই রেডিওতে মহালয়া শোনার জন্য উদগ্রীব থাকতো মানুষ। বর্তমানে টেলিভিশন ও মোবাইলের দৌলতে সেটাও প্রায় বন্ধ।তবে এখনো বহু প্রবীণ মানুষ আছেন যাঁরা রেডিওতেই মহালয়া শুনতে অভ্যস্ত।এখনো মহালয়া এলেই রেডিও নস্টালজিয়াই ভুগতে হয় বহু বাঙালি মানুষকে। মহালয়া এলেই মনে পড়ে রেডিওর বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠের সেই মহালয়ার মন্ত্র।টেলিভিশন ও মোবাইলের দৌলতে মহালয়ার নানান কাহিনি নিয়ে নানান অনুষ্ঠান হয় কিন্তু তার মধ্যেও রেডিও এক অন্য তৃপ্তি দেয় মানুষকে। যদিও বর্তমান প্রজন্মের কাছে রেডিও একটা মৃতপ্রায় ব্যাকডেটেড বস্তু।
তবে আজও মহালয়ার ঠিক আগে  ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম মেরামতের দোকানে কোথাও কোথাও দেখতে পাওয়া যায় রেডিও সারানোর  ভিড়। তবে সেই ভিড় শুধুমাত্র প্রবীণদের। আজও ঠিক মহালয়ার আগে রেডিওটিকে সরিয়ে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠের মহালয়া শুনতে উদগ্রীব হন বহু প্রবীণ মানুষজন। এক রেডিও মেরামতের কারিগর ধনঞ্জয় মাজি জানান, বর্তমানে রেডিওর কদর আর নেই ঠিকই, তবে  বছরে একবার মহালয়ার আগে কিছুটা হলেও কদর বাড়ে রেডিওর।
এছাড়াও বর্তমানে দেখা যাচ্ছে কোন শাড়ির দোকানের বিজ্ঞাপনের জন্য রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো ট্যাবেলোগুলি দোকানের বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি বাজাচ্ছে মহালয়ার মন্ত্র। ফলে যখন-তখন মহালয়া বাজানোই কদর কমছে মহালয়ার দিন মহালয়া শোনার।একটা সময় ছিল যখন বছরে ১ বার ঠিক পুজোর আগেই মহালয়া শোনা যেতো রেডিওতে।সেই সব দিন আর নেই।এছাড়াও তিনি বলেন, একটা সময় রাত্রি বারোটা পর্যন্ত জেগে থেকে রেডিও রিপেয়ারিংয়ের কাজ করতে হতো । কিন্তু বর্তমানে সে বাজার আর নেই কারণ আর বাজারে নতুন করে রেডিও দেখতে পাওয়া যায় না।রেডিওতে মহালয়া শোনার লোক বলতে কিছু প্রবীণ নাগরিক আছেন যারা বছরে ১ বার মহালয়ার আগে তাঁদের রেডিওটিকে ঠিকঠাক করাবার জন্য অবশ্যই তাঁর দোকানে আসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten + 19 =