আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে ডার্বি ঘিরে উত্তেজনা। আর পাঁচটা ডার্বির আগের দিন যেমন হয় ঠিক তেমনই। দুপক্ষের কোচেরাই বলছেন, ডার্বি জয়ই লক্ষ্য, নিজেদের নিয়ে বেশি ভাবছেন, প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবছেন না। সকালে যুবভারতীর প্র্যাক্টিস গ্রাউন্ডে অনুশীলন করল ইস্টবেঙ্গল, বিকেলে পাশের মাঠে নামলেন জোসে মোলিনার মোহনবাগান। সকালের যুবভারতীতে নাটকীয় মূহুর্ত। ইস্টবেঙ্গল অনুশীলন চলাকালীন যুবভারতীর পাশের হোটেল থেকে এক ‘গুপ্তচর’-কে দেখা যায় ভিডিও করতে।
এই হোটেলেই থাকেন মোহনবাগানের একাধিক বিদেশি ফুটবলার ও কোচিং স্টাফেরা। সেই প্রসঙ্গ উঠতে বিনো জর্জ মোহনবাগানের স্পোর্টসম্যান স্পিরিট নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। পাশাপাশি সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই মোহনবাগানকে সম্মান জানালেন বিনো জর্জ, বললেন, দেশের অন্যতম সেরা দল। তবে ৩০ তম আইএফএ শিল্ড জিততে তারাও মরিয়া। বিনো জর্জের কথায়, “সমর্থকদের কাছে ডার্বির মাহাত্ম্য অনেক, তাই জেতার জন্য ঝাঁপাবে লাল-হলুদ ব্রিগেড। মাঠের মধ্যে খেলা হয় ১১ বনাম ১১, মোহনবাগানও তাদের সমর্থকদের ভালো খেলা উপহার দিতে চায়। আমরা আমাদের লক্ষ্য ঠিক রাখছি। আমাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ভালো খেলতে হবে।”
জাতীয় দল থেকে ফিরে ইতিমধ্যেই ইস্টবেঙ্গল অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন নাওরেম মহেশ সিং ও আনোয়ার আলি। অনুশীলনে সাইডলাইনে দেখা গেল রামসঙ্গা, প্রভাত লাকরা ও নন্দকুমারকে। জাপানিস ফরোয়ার্ড হিরোশি ইবুসুকিকে রেখেই সম্ভবত ডার্বির ছক কষবেন লাল-হলুদ হেড কোচ অস্কার ব্রুঁজো। হামিদ শুরু থেকে নামেন, নাকি হিরোশি সেটাও অস্কারের মাস্টারমাইন্ডই বলবে। ডিফেন্সে কেভিন সিবিল্লের সঙ্গে আনোয়ার আলি শুরু করলেও মহেশ প্রথম একাদশে থাকবেন কিনা বোঝা যাচ্ছে না। কারণ লেফট উইংয়ে বিপিন সিং অনবদ্য ফুটবল খেলছেন। ফলে বিপিনকে বসানোর ঝুঁকি অস্কার নেবেন না।
অন্যদিকে বিকেল পাঁচটা থেকে অনুশীলন করল মোহনবাগান। ১৫ অক্টোবর কিশোর ভারতীর উত্তপ্ত পরিস্থিতির পর সমর্থকরা হয়তো ডার্বি বয়কট করতে পারেন। কোচ মোলিনা অবশ্য চাইছেন, সমর্থকরা গ্যালারি ভরিয়ে দিক, দলকে সমর্থনের জন্য গলা ফাটান। বাগান হেড স্যর বললেন, “আমরা জানি সমর্থকরা খুশি নয়। ফুটবলাররা ইরান যেতে চায়নি। আমার কোনও সমস্যা ছিল না। এখন জিতলেই সমর্থকরা খুশি হবে৷ সেটাই ফুটবলারদের বোঝাচ্ছি। সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, অন্তত ৯০ মিনিট দলকে সমর্থন করুন। তারপর আবার নিজেদের অবস্থানে থাকুন। ইস্টবেঙ্গলের নতুন জাপানিজ ফরোয়ার্ডকে নিয়ে অবশ্য মাথা ঘামাচ্ছেন না তিনি। বলেন, “হিরোশি ভালো ফুটবলার। কিন্তু সেটা আমাদের সমস্যা নয়। আমাদের জন্য সব ম্যাচই কঠিন। রবসন ও মিগুয়েলের মধ্যে দ্বৈরথ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। রবসন উইঙ্গার এবং সেকেন্ড স্ট্রাইকার, মিগুয়েল মিডফিল্ডার। তাহলে দ্বৈরথ হবে কীভাবে। সব মিলিয়ে আগামীকালের ম্যাচটাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
মোহনবাগান অধিনায়ক শুভাশিস বোস স্পষ্ট জানালেন, ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে ভাবছেনই না। তাঁর কথায়, “প্রতিপক্ষ নয়, আমদের টিম নিয়েই বেশি ভাবছি। আমাদের দলে ভালো ফুটবলার রয়েছে। আমরা চাইব প্রতিপক্ষ যখন আসবে তখন যাতে তাদের আটকাতে পারি। ফুটবলার হিসেবে চাই সমর্থকরা সব সময় সমর্থন করুক মাঠে এবং মাঠের বাইরে। আমি অনুরোধ করব তারা আবার আমাদের সমর্থন করুক। আমরা যে সাফল্য পেয়েছি তাতে সমর্থকদের ভূমিকা রয়েছে। তাদের ছাড়া এই সাফল্য সম্ভব হত না। সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে মরশুমের শুরুতে ট্রফি জিততে চাই।”

