পূণ্যভূমি কামারপুকুর এখনও সাদা বোঁদে ও আড়াই প্যাঁচের জিলিপির জন্য প্রসিদ্ধ

মহেশ্বর চক্রবর্তী

হুগলির পূণ্যভূমি কামারপুকুর (kamarpukur)। আর এই কামারপুকুর মানেই মানুষের আবেগময় একটা ভালোবাসা, ভক্তি ও শ্রদ্ধার পূণ্যভূমি। শ্রী শ্রী পরমপুরুষ ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের জন্মভিটে। তাই হাজার হাজার ভক্ত আসেন এই পূণ্যভূমিতে। কিন্তু এর পাশাপাশি এই কামারপুকুরের বিশেষ মিষ্টান্ন জিলিপি ও সাদা বোঁদে যে নাম ডাক রয়েছে তাও সেই আমল থেকে প্রসিদ্ধ। স্বয়ং রামকৃষ্ণ এখানকার সেই প্রখ্যাত সুস্বাদু মিষ্টান্ন জিলিপি খেতে খুবই ভালোবাসতেন। তিনি জিলিপি এতটাই খেতে ভালোবাসতেন যে খাবার পর অন্তন্ত একটা জিলিপি তাঁর লাগতই। তিনি নাকি বলতেন, জিলিপি অনেকটা গোরুর গাড়ির চাকার মতো। একেবারে গড় গড় করে চলবে। খাওয়ার পর জিলিপি খেলে হজমও গড় গড় করে হয়ে যাবে। এই জিলিপি আবার অন্যরকম। অঢ়হড়ের ডাল দিয়ে তৈরি যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এর স্বাদও অতুলনীয়। এদিকে জিলিপির পাশাপাশি এখানকার বোঁদেও সুস্বাদু ও বিখ্যাত। শ্রী শ্রী মা সারদা দেবী নাকি এই বোঁদে খেতে খুবই ভালোবাসতেন। তিনি মুড়ি দিয়ে খেতেই বেশি ভালোবাসতেন। যেখানেই যেতেন সেখানেই মুড়ির সঙ্গে এই সাদা বোঁদে নিয়ে যেতেন। পাশাপাশি বাড়িতে কেউ এলে তাদেরও মুড়ি ও সাদা বোঁদে খেতে দিতেন। এই বোঁদে বটবটি কলাই ও চাল গুঁড়ি দিয়েই তৈরি যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এখনও ঠাকুরের ভোগে জিলিপি ও বোঁদে নিবেদন করা হয়। এই বিষয়ে বীরেশ্বর মোদক নামে এক মিষ্টি ব্যবসায়ী জানান, আড়াই প্যাঁচের জিলাপি ও সাদা বোঁদে ঠাকুর ও মা সারদা খেতেন। এই দুই জিনিস আগে কোথাও তৈরি হত না। এখন তৈরি হলেও এই রকম সুস্বাদু ও পূণ্যভূমির ছোঁয়া কোথাও পাওয়া যাবে না। আমার পূর্বপুরুষ নিজ হাতে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দেব ও মা সারদাকে খাইয়েছিলেন। আমরা বংশপরম্পরায় এই কাজে যুক্ত। অপরদিকে মহাদেব লাহা জানান, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দেব ও মা সারদা জিলাপি ও সাদা বোঁদে খেতে ভালোবাসতেন। তাই এখনও ভোগে এই দুটো জিনিস এখনও দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে পূণ্যভূমি কামারপুকুরে আজও এই জিলিপ ও সাদা বোঁদের জন্য বিখ্যাত। ভক্ত ও আগত পর্যটকেরা আজও কামারপুকুর এলে জিলিপি ও বোঁদে তারা নিয়ে যাবেনই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − one =