কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ চরমে, অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে আত্মহত্যার চেষ্টা

অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে আবারও কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করল। শুক্রবার দিনভর উত্তেজনা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত বেশ কয়েকটি কলেজের শয়ে শয়ে পড়ুয়া বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। তাদের দাবি, করোনাকালে প্রায় দু’বছর অনলাইন ক্লাস করানো হয়। এর জন্য তাদের কোর্স সম্পূর্ণ হয়নি অথচ কর্তৃপক্ষ অফলাইন পরীক্ষার নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশ প্রত্যাহার ও অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ছাত্র-ছাত্রীরা। এই নিয়ে গত ৩০ দিনে চারবার আন্দোলন হল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। বুধবার, যে আন্দোলন রাত পর্যন্ত হয়েছিল। তখনই, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছিলেন অনলাইন পরীক্ষা হবে। কিন্তু হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার রাতে নোটিস দেওয়া হয় অনলাইনে নয়, অফলাইনে পরীক্ষা হবে। এরপরই সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায় কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ছাত্র-ছাত্রীদের পরিষ্কার বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অফলাইন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত বদল করে অনলাইন পরীক্ষা নিতে হবে। না হলে এবার বৃহত্তর আন্দোলন করবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় তারা। পড়ুয়ারা এদিন বলেন, কল্যানী, বিদ্যাসাগর ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন পরীক্ষা হলে কেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে না। তবে, এদিন কোনও সদুত্তর মেলেনি পড়ুয়াদের কাছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেমন অনড় রয়েছে অফলাইন পরীক্ষার সিদ্ধান্তে তেমনই পড়ুয়ারাও অনড় রয়েছে তাঁদের দাবিতে। বেলা যত গড়ায় পড়ুয়াদের আন্দোলন ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে। আন্দোলন চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মীয়মান বিল্ডিংয়ের ওপরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে এক আন্দোলনকারী। পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের সিঁড়ি থেকে গলায় দড়ি নিয়ে ঝুলে পড়ার চেষ্টা করেছিল অজয় পন্ডিত নামে এক পড়ুয়া। তার বাড়ি দুর্গাপুরে। সিক্স সেমিস্টার ল’কলেজের ছাত্র সে। শেষ পর্যন্ত অন্য আন্দোলনকারীরা ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। শুধু তাই না প্রথমে অবরোধ চলাকালীন আটকে যায় জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিংয়ের গাড়ি। যদিও বিধায়ক পড়ুয়াদের এই আন্দোলনকে সমর্থন জানান। এরপর মূল গেট বন্ধ থাকায় বেড়া টপকে ছাত্ররা সরাসরি ঢুকে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। গেট ভাঙার চেষ্টা হয়। তবে আন্দোলনত পড়ুয়াদের একটাই দাবি অফলাইনে পরিবর্তে অনলাইন পরীক্ষা নিতে হবে। যদিও এত কিছু ঘটনার পরও ভাইস-চ্যান্সেলার সাধন চক্রবর্তী এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten + nineteen =