শনিবার অনশন প্রত্যাহারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নয়া পদক্ষেপ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। এবার ডিএ ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ দাবি করে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে গণ ই- মেল করার পরিকল্পনা নিলেন ডিএ আন্দোলনকারীরা। শুধু রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুই নন, একইসঙ্গে সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ই-মেল করবেন বলেও জানান তাঁরা। এখানেই শেষ নয়, আন্দোলনকারীদের তরফে এও জানানো হয়েছে যে, ২৯ তারিখ গণ অনশন হবে। ৩০ তারিখ হবে মহা মিছিল। যার শুরু হবে শিয়ালদা ও হাওড়া স্টেশন থেকে। এরপর এপ্রিলের ১০ ও ১১ তারিখ দিল্লিতেও অবস্থান করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কলকাতায় আসার দিন কোমর বেঁধে নামছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চও। কারণ, এই ডিএ ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা আগে থেকেই তাঁরা নিয়ে রেখেছেন। আর তারই মাঝে কলকাতা সফরে রাষ্ট্রপতি স্বয়ং। আর সেই কারণে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফ থেকে এ সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতির দরবারে তাঁদের দাবি পেশ করতে রাজ্যজুড়ে গণ ই-মেল কর্মসূচি নেওয়ার। বদলির নির্দেশ আর অন্যদিকে বেতনে কোপ পড়ার কারণে এবার তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে পাশাপাশি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফ থেকে এও জানানো হয় যে, ‘চ্যালেঞ্জ করব। সরকার কাটতে পারে না। এটা বেআইনি। আর কাটলে কাটবে।‘
এদিকে মহার্ঘ ভাতা ইস্যুতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও জানানো হয়েছে, কেন্দ্রের সমান মহার্ঘ ভাতা দেওয়া সম্ভব নয় রাজ্যের। এক্ষেত্রে সামনে আনা হয়েছে শূন্য কোষাগার তত্ত্বও। আর এখানেই আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন, তাহলে কীভাবে এত সরকারি প্রকল্প, এত টাকা ব্যয়ে দুয়ারে সরকার প্রকল্প করা হচ্ছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। এই ইস্যুতে শাসক বিরোধী শিবিরকেও পাশে পেয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাতে আরও ঝাঁঝ বাড়ছে আন্দোলনের। রাজ্য সরকার আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে যত কড়া পদক্ষেপ করছে ততই বাড়ছে বিতর্কও।
এদিকে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার দাবিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফ থেকে। মাস খানেক আগে তাঁরা অনশনও শুরু করেছিলেন শহিদ মিনারের পাদদেশে। তবে এই অনশনের জেরে দু, একজন আন্দোলনকারী অসুস্থও হয়ে পড়ায় অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন আন্দোলনকারীরা। শনিবার অনশন প্রত্যাহার হলেও আন্দোলন জারি থাকবে বলেই জানান তাঁরা।
এদিকে শীর্ষ আদালতে গিয়েও কিছুতেই যেন জট কাটছে না ডিএ ইস্যুতে। কারণ, শীর্ষ আদালতেও এই ডিএ ইস্যুতে ক্রমাগত পিছোচ্ছে শুনানি। ১১ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে শুনানি রয়েছে ডিএ মামলার। যার ফলে আন্দোলনের মেয়াদ বেড়েছে আরও। আর এই আন্দোলনের জের হিসেবে আগামী ২৯ মার্চ গণ অনশন এবং ৩০ মার্চ হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে মিছিল এবং এরপর এপ্রিলে দিল্লিতে অবস্থানের বার্তা থেকে স্পষ্ট যে, নিজেদের দাবিদাওয়া আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের পথ থেকে যে একটুও সরবেন না সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকারীরা। এমন একটা জটিল পরিস্থিতিতে বাংলায় আসছেন রাষ্ট্রপতি। তবে ডিএ আন্দোলনকারীদের ই-মেলের উত্তর রাষ্ট্রপতি দেন কিনা, সেটাই এখন দেখার।