নিজস্ব প্রতিবেদন, পাণ্ডবেশ্বর: সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলনে রয়েছেন কিন্তু নিয়মিত স্কুলে আসেন না। পড়াশোনা লাটে উঠছে এই অভিযোগ তুলে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সকালে পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের প্রতাপপুর পঞ্চায়েতের ধবনি গ্রাম অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান আবিভাবকদের একাংশ। তৃণমূলের মদতে এই বিক্ষোভ পালটা অভিযোগ ভাস্করবাবুর।
দুর্গাপুর ফরিদপুরের ধবনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করছেন। যিনি রাজ্যের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অন্যতম মুখ। বৃহস্পতিবার ভাস্কর ঘোষ স্কুলেই ছিলেন। তখনই দুর্গাপুর ফরিদপুরের ধবনী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভাস্কর ঘোষের স্কুলেই আচমকা ‘ক্লাস না করে বেতন তোলা মানছি না, মানব না’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে হাজির হন কয়েকশো অভিভাবক। তাঁরা জোর করে বিদ্যালয়ের ভেতর ঢুকতে চাইলে বাধা দেন স্কুলের অন্য শিক্ষিকারা। ফলে তাঁদের সঙ্গে অভিভাবকদের বচসা বাধে। স্কুলের দুই শিক্ষিকার সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে যান অভিভাবকরা। কিন্তু ভাস্কর ঘোষ স্কুলের ভেতরেই ছিলেন। শুরু হয় ব্যাপক উত্তেজনা। দু’ঘণ্টা ধরে আন্দোলন চলার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দুর্গাপুর ফরিদপুর থানার পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, এই বিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষিকা ও ভাস্কর ঘোষ নামে একজন শিক্ষক রয়েছেন। ভাস্করবাবু সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ সংগঠনের নেত । তিনি বেশ কিছু দিন ধরে ডিএ আন্দোলন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁকে কলকাতায় মিটিং মিছিলে দেখা যায়। টিভিতে দেখা যায়। কিন্তু স্কুলে ওই শিক্ষককে দেখা যায় না। তিনজন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে একজনের অনুপস্থিতির কারণে স্কুলে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা শিকেই উঠেছে। বিদ্যালয়ে না এসেও ওই শিক্ষক নিয়মিত বেতন তুলছেন বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই ভাস্করবাবুর দাবি, ‘তৃণমূল নেতাদের প্ররোচনায় বহিরাগতদের দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সংগঠিত করা হয়েছে। আমি যখনই মিটিং, মিছিলে গিয়েছি নিয়ম মেনেই ছুটি নিয়েই গিয়েছি। আমার এতদিনের কর্মজীবনের জমানো ছুটির ১৫৬ দিন অতিবাহিত করেছি। আমার নামে শাসকদলের লোকেরা অন্যায় ভাবে অভিযোগ তুলছেন যাতে করে আমাদের আন্দোলনকে দমানো যায়।’ তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যদি কোনও নিয়ম বাহির্ভূত কাজের অভিযোগ থাকে, তা হলে আদালতের কাছে যেতে পারেন।’
ভাস্করবাবু বলেন, ‘১৬ মে পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের সিডিপিও দপ্তরের ডেপুটেশন কর্মসূচির দিন অন্যদের সাথে আমাকে মারধর করা হয়েছে। পরে আমার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা করা হয়। আদালত থেকে আমি বেল পাই। যেহেতু আমি ডিএ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তাই তৃণমূল নেতারা ভয় পেয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।’ যদিও ভাস্করবাবুর পক্ষে স্কুলের শিক্ষিকার দাবি, তা¥দের শিক্ষক ভাস্করবাবু কোনও দিন স্কুলে না এসে হাজিরা করেননি। তিনি স্কুলে না আসতে পারলে ছুটি নিতেন। স্কুলে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে প্রয়োজনে সেটা চেক করতে পারেন অভিভাবকরা। তা হলেই বোঝা যাবে ভাস্করবাবু স্কুলে না এসে হাজিরার খাতায় সই করেছেন কিনা।