২০২৩ সালে ১০ ডিসেম্বর মাসে প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা নেওয়া হবে। বুধবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা ঘোষণা করেছেন। পর্ষদের ওয়েবসাইটে বুধবার সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবেও বলে জানান পর্ষদ সভাপতি। সংবাদমাধ্যমে সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হবে টেট-এর নিবন্ধীকরণ বা রেজিস্ট্রেশন। পর্ষদ সভাপতি আরও জানিয়েছেন, এবছর ওএমআর শিটের আসল কপি পর্ষদ নিয়ে নেবে ও পরীক্ষার্থী কপি তাঁরা বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন।
এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টা থেকে আবেদন করার সময় শুরু হবে। তিন সপ্তাহ সময় থাকবে প্রার্থীদের কাছে। কারও পেমেন্টের ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা থাকলে আরও একদিন বর্ধিত করা হবে সেই সময়সীমা, এমনটাও জানান পর্ষদ সভাপতি। এর পাশাপাশি এও জানান, টেট আর নিয়োগ আলাদা। এনসিটিই-র গাইডলাইন ও সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ মেনে প্রতি বছর টেট পরীক্ষা নেওয়া হবে। গত বছরও সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। তবে কখনই ধরে নেওয়া যায় না যে কেউ টেট পাশ করলেই সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগ হবে।
গৌতম পাল এও জানান, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা যেমন প্রতি বছর হয়, তেমনই টেট হবে প্রতি বছর। নিয়োগ কোনও বছরে না হলেও টেট পরীক্ষা নেওয়া হবে। সঙ্গে এও জানান, শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন যাতে দ্রুত নিয়োগ হয়। ইতিমধ্যেই আমরা ইন্টারভিউ নেওয়ার প্রক্রিয়াও শেষ করেছি। এরই পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালের সংযোজন, প্রার্থীদের করা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্র মেলেনি বলেই আটকে আছে নিয়োগ। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ থেকে ছাড়পত্র মিলেছে। সুপ্রিম কোর্ট থেকেও দ্রুত ছাড়পত্র মিলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি আরও দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও চান অবিলম্বে নিয়োগ হোক।
এছাড়া গৌতম পাল এদিন এও ব্যাখ্যা করেন, নিয়োগ আর টেট দুটো ভিন্ন বিষয়। টেট পরীক্ষায় পাশ করে থাকলে, সেই প্রার্থীদের মধ্যে থেকে শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হবে। তিনি উল্লেখ করেছেন, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা যেমন প্রতি বছর হয়, তেমনভাবেই টেট পরীক্ষা প্রতি বছর নিতে হবে বলে উল্লেখ রয়েছে এনসিটিই-র গাইডলাইনে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণেও সে কথা বলা আছে। তাই নিয়োগ প্রতি বছর না হলেও টেট পরীক্ষা প্রতি বছর নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছরের পরীক্ষার পর ইন্টারভিউ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলে গেলেও ওই নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ২০২০-২২ সালে ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ হওয়ার আবেদন করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁদের দাবি, প্রশিক্ষণের কোর্স যে শেষ হয়নি, সেটা বোর্ডের দোষ। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, প্রশিক্ষণ শেষ না করে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যাবে না। এরপর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান ওই প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা।