সাগরদিঘির বিধায়ক দল ছাড়লেও মানুষের সমর্থনকে সামনে রেখেই এগোতে চাইছে প্রদেশ কংগ্রেস। সোমবার কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে এমনই বার্তা দিলেন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী। এদিন তিনি বেশ প্রত্য়য়ের সঙ্গেই জানান, মমতার থেকে মানুষের মোহমুক্তি শুরু হয়ে গিয়েছে। এদিন সাগরদিঘির প্রসঙ্গ টেনে অধীর বলেন, ‘সাগরদিঘিতে তৃণমূলকে হারিয়ে মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ কথা বলবে না। মানুষ শেষ কথা বলবেন।’
এদিন মহাজাতি সদনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে অধীর রঞ্জন এও জানান, ‘নিশ্চিন্তে থাকুন বাংলায় কংগ্রেসের পুনর্জাগরণ শুরু হয়ে গিয়েছে, কংগ্রেসের পুনরুত্থান শুরু হয়ে গিয়েছে। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে তৃণমূলকে হারিয়ে আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি শেষ কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলবে না, কংগ্রেসও বলবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিম্মত হয়নি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানোর। কারণ শান্তিপূর্ণ ভোট হলে তৃণমূলকে শ্মশানে যেতে হবে।’
এরই রেশ টেনে অধীর রঞ্জন এও জানান, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁর কাছে যোগদানের আবেদন আসছে। এদিকে কয়েকদিন আগেই ফিরহাদ হাকিমের জামাই যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। ফিরহাদের জামাইয়ের প্রসঙ্গ তুলে তিনি এও জানান, ‘এখানকার মন্ত্রীর জামাই ইয়াসর আলি যোগ দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে জিতে সাগরদিঘির বিধায়ক হন বায়রন বিশ্বাস। তবে ভোটে জেতার পর পরই তিনি দল বদল করেন। যোগ দেন তৃণমূলে। আর এরপরই রাজ্য কংগ্রেসের তৃণমূল বিরোধিতা আরও তীব্র হয়। বিধায়ক দলবদল করলেও, মানুষের সমর্থন কংগ্রেসের সঙ্গেই তা বোঝাতে মরিয়া তাঁরা। শুধু তাই নয়, জনবলেই বলীয়ান হয়ে এবার তৃণমূল দুর্গেও ফাটল ধরাতে চাইছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন।
এর পাশাপাশি তুলে ধরেন কেন্দ্রে জোট প্রসঙ্গের কথাও। কেন্দ্রে কংগ্রেস, তৃণমূল এক মঞ্চে এসে বিজেপি বিরোধীদের নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ জোট গড়লেও, বাংলায় যে দোস্তির বদলে কুস্তি’-ই চলবে এদিন অধীরের কথায় স্পষ্ট। এই প্রসঙ্গে প্রদেশ সভাপতির দাবি, ‘কংগ্রেসের পুনরুত্থান শুরু হয়েছে বলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের পা ধরেছেন।’ তাঁর আরও দাবি, বিভিন্ন জায়গা থেকে এবার কংগ্রেস কর্মীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হবে, ‘বিজেপি বলবে মমতার সঙ্গে কংগ্রেসের মিল হয়ে গেল। মমতার দলের লোক বলবে, কংগ্রেস করে কী হবে, ফিরে এসো। কোনও কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। আমি পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলে যাচ্ছি, আমাদের লড়াই এই পশ্চিমবঙ্গে এবং ভারতবর্ষে। একদিকে বিজেপি আরেকদিকে টিএমসির বিরুদ্ধে।’