সাম্প্রতিক লোডশেডিং-এর কারণ ব্যাখ্যা করলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস

অবশেষে লোডশেডিংয়ের কারণ নিয়ে মুখ খুললেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে সোমবার মেদিনীপুরের ডেবরায় একটি পোল ভেঙে পড়ে যাওয়ার ছবি দেখান মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘প্রতিদিনই কালবৈশাখীর ঝড়ে তার ছিঁড়ে যাচ্ছে। পোল ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। সেই কারণেই পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। কোথাও কোথাও সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে।’ একইসঙ্গে সম্প্রতি বারবার বিদ্যুৎ বিভ্রাট প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, ‘আমাদের কাছে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ আছে। কোথাও কোথাও যান্ত্রিক গোলযোগ, কোথাও কোথাও প্রকৃতির কাছে হেরে যাওয়ার কারণে, কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। আমরা যত দ্রুততার সঙ্গে সম্ভব, তা দূর করার চেষ্টা করছি। একটা এসি কেন,১০ টা এসি লাগান, কোনও অসুবিধা নেই। আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি নেই। শুধু লোডটা একটি বাড়িয়ে নিন।’
এদিকে লোডশেডিং-এ রাজ্যবাসীর নাজেহাল অবস্থা নিয়ে সোমবার রাজ্য সরকারকে একহাত নিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে বিরোধী দলেতা এও দাবি করেন, বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যে বিদ্যুতের ঘাটতি বেড়ে গিয়েছে। এরপরই সাংবাদিক বৈঠক করে গোটা বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে দেখা যায় রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে বাম আমলের সঙ্গে তৃণমূলের আমলের পরিসংখ্যানগত তথ্যের তুলনাও টেনে আনেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। বলেন, ‘বাম আমলে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ। বর্তমানে গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৩৩ লাখ। বাম আমলে সর্বোচ্চ প্রয়োজন ছিল ৪০৮৫ মেগাওয়াট। আর এখন তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৯২০০ মেগাওয়াটে। তৃণমূল সরকার আসার পর সাগরদিঘিতে দুটি ইউনিট বাড়িয়েছে। ডিপিএলে একটি ইউনিট বাড়িয়েছে। সাগরদিঘিতে ৬৬০ মেগা ইউনিট এর কাজ চলছে।’ এর পাশাপাশি মন্ত্রী এও জানান, ২০১১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ পরিষেবায় উন্নয়নের জন্য ২৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে।
এরই পাশাপাশি অসম ও উত্তর প্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বিদ্যুতের মাশুলের সঙ্গে বাংলায় বিদ্যুতের মাশুলেরও তুলনা টানেন তিনি। এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে বাংলায় যে অনেক কম খরচে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া হয়, তা বোঝাতে গিয়ে মন্ত্রী এদিন এও জানান, ‘অসমে বিজেপি সরকারের বিদ্যুতের জন্য ইউনিট পিছু দিতে হয় ৮ টাকা ১৪ পয়সা। উত্তর প্রদেশে বিদ্যুতের জন্য ইউনিট পিছু দিতে হয় ৭ টাকা ৫৪ পয়সা। পশ্চিমবঙ্গে সেখানে ৭ টাকা ১২ পয়সা।’ একইসঙ্গে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের দাবি, ‘সারা ভারতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে বাংলা। সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে বাংলায়।’ এই নিয়ে কেন্দ্রের স্বীকৃতির কথাও তুলে ধরেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + 5 =