নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: লোকসভা ভোটে রাজ্যজুড়ে ভরাডুবি হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের কাছে হারতে হয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারকে। সারা রাজ্যের এই সবুজ ঝড়ের মাঝেই তৃণমূলের কাঁটা হয়ে রইল বাঁকুড়া শহর। শহরের ২ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টিতেই এগিয়ে গেরুয়া শিবির। বাঁকুড়া শহরে কেন এমন উলটপুরাণ? এর পিছনে কী রয়েছে অন্তর্ঘাত নাকি অন্যকিছু তা জানতে ফলাফল কাঁটাছেঁড়া করতে শুরু করেছে তৃণমূল। বিজেপির যুক্তি, শহরের শিক্ষার হার বেশি থাকায় মানুষের রায় গিয়েছে গেরুয়ার পক্ষে।
বাঁকুড়া শহর সহ বাঁকুড়া বিধানসভা দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। ২০২১ সালে সেই মিথ ভেঙে দেয় গেরুয়া শিবির। যদিও গত পুরসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া শহরে কার্যত ধরাশায়ী হয়ে যায় বিজেপি। পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২ টিতে সরাসরি তৃণমূল ও ৩টি ওয়ার্ডে তৃণমূলেরই বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থী জয়লাভ করেন। কিন্তু দু’বছর যেতে না যেতেই এই লোকসভা ভোটে ফের উলটপুরাণ।
বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬ টি বিধানসভায় তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও, বিজেপি বাঁকুড়া বিধানসভায় ব্যাপক ভোটে এগিয়ে থাকে। বাঁকুড়া বিধানসভায় বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ১৬ হাজার ৩১২ টি ভোটে। এই ব্যবধানের বড় কৃতিত্ব বাঁকুড়া পুর এলাকার। জানা গিয়েছে, পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়েছে বিজেপি। বিজেপির যুক্তি, শহরের ভোটার শিক্ষিত। সেই শিক্ষিত ভোটার কেন্দ্রের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প সম্পর্কে অবহিত হওয়ার কারণেই ওই ভোট গিয়েছে বিজেপির ভোটবাক্সে।
পাশাপাশি বিজেপির স্বীকারোক্তি, লোকসভার বাকি অংশের মানুষকে প্রকল্পগুলি সম্পর্কে বোঝাতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই সেখানে পিছিয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। লোকসভার ৬টি বিধানসভায় জয়ের পরেও জেলা সদর বাঁকুড়া শহরে এই পিছিয়ে থাকা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছে না ঘাসফুল শিবির। ইতিমধ্যেই এমন ফলাফলের কারণ নিয়ে দলের অন্দরে শুরু হয়েছে কাটাছেঁড়া। তৃণমূলের দাবি ,পানীয় জল থেকে রাস্তাঘাট সর্বক্ষেত্রে পুরসভা ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়ে থাকলেও, শহরে কেন এমন শোচনীয় ফলাফল হল তা খতিয়ে দেখা হবে। এক্ষেত্রে অন্তর্ঘাতের তত্ত্বও একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছে না বিশেষজ্ঞ মহল।