কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের তিন দিন আগে গত বুধবার নিউ টাউন থানায় ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা তথা ভাঙড়ের বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ দায়ের করেন এক তরুণী। পুরোটাই ষড়যন্ত্র বলে দাবি করে আসছিলেন আইএসএফ বিধায়ক। ধর্ষণের অভিযোগের সেই মামলায় ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার হাই কোর্টের বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনেছে। জানিয়েছে, আপাতত রক্ষাকবচ দেওয়া হচ্ছে আইএসএফ বিধায়ককে। ১৬ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। তার আগে পর্যন্ত নওশাদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ।
ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা তথা ভাঙড়ের বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ দায়ের করেন এক তরুণী। অভিযোগ সল্টলেক পুরসভার চেয়ারম্যান তথা দলের তরফে ভাঙড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত মহিলাকে সাহায্য করেছিলেন। শুরু থেকেই এটাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেন নওশাদ। পরে প্রকাশ্যে আসে ওই অভিযোগকারিণীর পরিচয়। জানা যায়, ডোমকল শহর তৃণমূলের সর্বশেষ যে কমিটি ঘোষিত হয়েছিল, তাতে মোট পাঁচ জনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। এবং তাতে চার নম্বরে নাম ছিল নওশাদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারিণী তরুণীর। জানা গিয়েছে, দলের তরফে তিনি রেশন ডিলারদের সংগঠন এবং সেই সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় দেখভাল করতেন।
তাঁর অভিযোগ, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে একটি অফিসে নওশাদ তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন। তার পরে একাধিক বার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেন বলে দাবি তাঁর। অভিযোগকারিণী এবং তাঁর ভাই গিয়ে নিউ টাউন থানায় নওশাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁরা থানায় পৌঁছনোর খানিক ক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফেরা সব্যসাচী।
যদিও তৃণমূল এসব মানতে নারাজ। তৃণমূলের বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান অপূর্ব (ডেভিড) সরকার বলেন, ‘কিছু না হলে তো কেউ অভিযোগ জানাতে যায় না! সম্পর্কের ক্ষেত্রে দলীয় ভেদাভেদ দেখা উচিত নয়। নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে।’ অন্য দিকে, নওশাদ জানান, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা কতটুকু, তা অভিযোগকারিণীর পরিচয় থেকে স্পষ্ট।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত থেকে নওশাদের বিধানসভা কেন্দ্র উত্তপ্ত। ভোটের ফল নিয়ে তৃণমূল এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে যোগসাজশের অভিযোগ ওঠে ভাঙড়-২ ব্লকে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় আইএসফের কর্মী-সমর্থকদের। বোমাবাজি, গুলি চলার ঘটনায় পুলিশের পদস্থ কর্তা এবং এক পুলিশকর্মীর জখম হওয়ার খবর মিলেছে। অন্য দিকে, মঙ্গলবার রাতে দুই আইএসএফ কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। বুধবার সকালে তাঁদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।