কম্বলকাণ্ডে জিতেন্দ্রর স্ত্রীকে নোটিস পুলিশের, আজ জিজ্ঞাসাবাদ

আসানসোল: কম্বলকাণ্ডে এবার পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী তথা বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি তিওয়ারিকে জেরা করতে চায় পুলিশ। এই মর্মে সোমবার একটি নোটিস ইস্যু করা হয়েছে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশের তরফে। এদিন দুপুর একটা নাগাদ আসানসোল উত্তর থানার এক মহিলা পুলিশ অফিসার সহ পুলিশকর্মীরা আসানসোল জিটি রোডের গোধূলি মোড় সংলগ্ন চৈতালিদেবীর আবাসনে আসে। তারা সেখানকার কেয়ারটেকারের কাছ থেকে জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও চৈতালি তিওয়ারি এই অ্যাপার্টমেন্টের কত তলার আবাসনে থাকেন তা জানতে চান। কেয়ারটেকার তা বলায় পুলিশ কর্মীরা সেখানে যান। কিন্তু আবাসনের মুখ্য দরজায় তালা লাগানো ছিল। বেশ কিছুক্ষণ ডাকাডাকির পরে আওয়াজ না পেয়ে পুলিশ কর্মীরা আবাসনের দরজায় সেই নোটিস লাগিয়ে চলে যান। পুলিশকর্মীরা ওই আবাসনে প্রায় ২০ মিনিটের মতো ছিলেন বলে কেয়ারটেকার জানান। তিনি বলেন, পুলিশ কর্মীরা বিশেষ কিছু আমার কাছে জানতে চাননি বা বলেননি। শুধু জানতে চান জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও চৈতালি তিওয়ারি কোথায় থাকেন।
যে নোটিস লাগানো হয়েছে তাতে এই মামলার তদন্তকারী অফিসার বা আইও হিসাবে আসানসোল উত্তর থানার এসআই সুভাষ বন্দোপাধ্যায়ের নাম ও সই আছে। মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর সকাল দশটার সময় চৈতালি তিওয়ারিকে আবাসনে থাকতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য রাখতে বলা হয়েছে। এদিকে এই নোটিস দেওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
এদিন দুপুরে আবাসনে পুলিশের নোটিস লাগানো নিয়ে জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ফোনে তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যম থেকেই এটা জানলাম। পুলিশ আমার স্ত্রীর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেনি বা নোটিস নিয়ে কিছু বলেনি। যা করার তা আইনের পথেই করব। আমার স্ত্রী ঘটনার পাশাপাশি মৃত ও আহতদের নিয়ে খুবই চিন্তিত। তিনি আরো বলেন, সেদিন কি হয়েছে ও আর তাতে কার কি ভূমিকা ছিল, তা সবার জানা। আসল কথা হলো, তৃণমূল কংগ্রেস আমাদের সঙ্গে পেরে উঠতে না পেরে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে প্রতিহিংসামুলক আচরণ করছে।
জিতেন্দ্র তিওয়ারির অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু বলেন, বিজেপির মতো আমরা কেন্দ্রীয় এজেন্সি নিয়ে রাজনীতি করি না। সেদিন বিজেপির নেতারা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করেছে। যারা মারা গেছেন, তাদের পরিবারই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ সেই মতো মামলা করে তদন্তে নেমেছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার আসানসোল পুরনিগমের ২৭ নং ওয়ার্ডে রেলপারের রামকৃষ্ণ ডাঙাল এলাকায় শিবচর্চার পাশাপাশি মেগা কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠান। কম্বল নেওয়া নিয়ে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় এফআইআরে নাম থাকা ৩ জন-সহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তারা ৮ দিনের পুলিশ হেপাজতে আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × one =