পুলিশ মিউজিয়াম স্থানান্তরিত করা হল আলিপুর মিউজিয়ামে। পুলিশ মিউজিয়াম ছিল ১১৩, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় রোডে। এখন তা স্থানান্তরিত হয়ে চলে এল আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের সেল-৪ এ। ফলে এখন থেকে আলিপুর মিউজিয়ামেই বেয়নেট, বন্দুক এবং রাইফেলের ইতিহাসের সাথে স্বাধীনতা-পূর্ব যুগে বাংলায় সময়ভিত্তিক বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের প্রতিফলন এখন থেকে এখানে দেখা যাবে। শনিবার আলিপুর মিউজিয়ামের অভ্যন্তরে নতুন পরিকল্পিত পুলিশ মিউজিয়াম বিভাগের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
এদিনের এই অনুষ্ঠানে ফিরহাদ হাকিম জানান ,আলিপুরের হেরিটেজ জেল নষ্ট করার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার উদ্যোগ নিয়েছেন হেরিটেজ প্রপার্টি রেষ্টরেশন করার। হিডকোকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ৭০০ গাড়ি ময়লা বের করে আবারও সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পুরনো স্মৃতি রক্ষায় কাজ করছেন। ক্ষুদিরাম, চিত্তরঞ্জন ,নেতাজি র মত বহু মানুষের অস্তিত্ব আছে। এদিন মেয়র ফিরহাদ এও জানান, পুরো পুলিশ মিউজিয়াম এখানে এবার পাকাপাকি ভাবে স্থানান্তরিত করা হল।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলও। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নগরপাল বিনীত জানান, ‘এখন থেকে অনেক বেশি লোক দেখতে পারবে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন জিনিস এখানে রাখা থাকবে।’ প্রসঙ্গত,এই পুরো উদ্যোগ নিয়েছে হিডকো।
প্রসঙ্গত, আলিপুর জেলের সেল-৪-এর চৌদ্দটি কক্ষ সংস্কার করা হয়েছে এবং উল্লেখযোগ্য বিপ্লবীদের ব্যবহৃত রিভলভার, বোমা ইত্যাদির মতো বিভিন্ন প্রত্নবস্তু সেখানে প্রদর্শন করা হয়েছে। ডিএইচ কিংসফোর্ডের কাছে পাঠানো বই বোমা, দীনেশ গুপ্তের ব্যবহৃত পিস্তল, স্বাধীনতা-পূর্ব সময়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের পিস্তল, রিভলভার, বোমাগুলি সাধারণ দেখার জন্য কাঁচের কেসে প্রদর্শন করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য মামলার ইতিহাস যেমন আলিপুর ষড়যন্ত্র মামলা ১৯০৮, ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা ১৯১০, , ঢাকা অনুশীলন সমিতির বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সাথে, রাশ বিহারী বসুর ১৯১২ সালের ক্যাপিটাল ষড়যন্ত্র মামলায় জড়িত থাকা, যুগান্তর গ্রুপের কার্যকলাপ ১৯১৬-১৯১৭ এর নানা ঘটনা এখানে মূলত তুলে ধরা হয়েছে। পাশাাপাশি এও জানানো হয় যে, এর জন্য আলাদা কোনো টিকিট কিনতে হবে না। সঙ্গে এও জানানো হয়, আলিপুর মিউজিয়ামে প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা খোলা থাকবে। প্রতি সপ্তাহে সোমবার ছাড়া সব দিন খোলা থাকবে মিউজিয়াম। লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শোগুলি প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় এবং প্রতি সপ্তাহান্তে অর্থাৎ শুক্র থেকে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা এবং সন্ধ্যা ৭টায় প্রদর্শিত হবে।
এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেবলীনা বিশ্বাস, কাউন্সিলর এবং বরো চেয়ারম্যান, কেএমসি, শ্রী দেবাশিস সেন, এমডি হিডকো।