মালদা: মালদা শহরের প্রাণকেন্দ্র পুরনো হাসপাতাল সংলগ্ন পরিত্যক্ত জায়গা থেকে কাটা মুন্ডু উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নামানো হল পুলিশ কুকুর। বুধবার সকাল থেকেই জেলার সিআইডি কর্তা থেকে শুরু করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে ময়নাতদন্ত শুরু করে। সমস্ত জায়গা চুলচেরাভাবে তদন্ত করে দেখা হয়। যেখান থেকে কাটা মুন্ডুটি উদ্ধার হয়েছিল সেখানেও লাল ফিতের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখে তদন্তকারী পুলিশকর্তারা। পুলিশ কুকুর দিয়ে গোটা এলাকার তদন্ত করেন গোয়েন্দা এবং পুলিশ কর্তারা।
এদিকে শহরের সবথেকে ব্যস্তবহুল এলাকা হিসেবে পরিচিত ফোয়ারা মোড় সংলগ্ন পুরনো হাসপাতাল চত্বর। আর সেখানে বাজারের ব্যাগের মধ্যে কিভাবে কাটা মুন্ডু চলে এল তা নিয়ে এখন শহর জুড়েই শুরু হয়েছে জোর চর্চা। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে রাস্তার অলিগলিতেও এই কাটা মুন্ডু উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।
উল্লেখ্য, এই পুরনো হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছে বিশাল পার্কিং জোন, যেখানে চার চাকার গাড়ি থেকে দুই চাকার মোটরবাইক সহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন থাকে। ওই এলাকায় পার্কিং জোন সকাল থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে পুরসভার পক্ষ থেকে। এর পাশাপাশি ওই এলাকায় রয়েছে একাধিক কসমেটিক্স, লটারি, ফাস্টফুডের দোকান। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লোকজনের সমাগম হয়ে থাকে পুরাতন হাসপাতাল চত্বরে এলাকায়। এর বিপরীতে রয়েছে চিত্তরঞ্জন পুর মার্কেট। কাজেই সবসময়ের জন্য ঝলমল করে গোটা এলাকা। তার মধ্যেই ঘটেছে এই বিপত্তি। যা আরো একবার তদন্তকারী পুলিশকর্তাদের ভাবিয়ে তুলেছে।
স্থানীয় একাংশ বাসিন্দাদের বক্তব্য, চার চাকার যানবাহন রাতের অন্ধকারে ওইখানে পার্কিং করা হয়। কেউ বা কারা ব্যাগে করে ওই কাটা মুন্ডুটি নিয়ে এখানে ফেলে দিয়ে গিয়েছে। এখানকার সুস্থ এবং শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে উদ্ধার হওয়া কাটা মুন্ডুটি মধ্য বয়স্ক কোনো ব্যক্তির হতে পারে। তবে এটি অন্তত এক থেকে দেড় মাস আগে এই এলাকায় ফেলা হয়েছে। দুর্গন্ধ ছড়ানোর পরেই মানুষের নজরে আসে বিষয়টি। আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত চলছে। এদিন পুলিশ কুকুর দিয়ে গোটা এলাকায় তদন্ত চালানো হয়েছে। সমস্ত অস্থায়ী দোকান, পার্কিং স্ট্যান্ডের ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘরগুলিতেও তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। তদন্তকারী পুলিশ কর্তাদের দাবি, খুব শীঘ্রই কাটা মুন্ডু রহস্যের কিনারা করে ফেলা হবে। পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। নানা সূত্র ধরে এই ঘটনার তদন্ত চলছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে।