মোবাইল ব্যবহার করা নিয়ে শাশুড়ি এবং পুত্রবধূর মধ্যে বচসা। তারই জেরে দুইজনের মধ্যে চুলোচুলি। আর এই অবস্থায় রাগের মাথায় পুত্রবধূর ডান কান কামড়ে কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠলো শাশুড়ির বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে এমন ঘটনাকে ঘিরে গাজোল থানার সরকার পাড়া এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার পরই ওই গৃহবধূর আর্ত চিৎকার শুনে পাড়া-প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। রক্তাক্ত গৃহবধূকে উদ্ধার করে গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান স্থানীয় বাসিন্দারা।
সংশ্লিষ্ট গ্রামীণ হাসপাতালের কর্তব্যরত এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ওই মহিলার ডানকানের নীচের একটা অংশ ব্যাপক ক্ষত হয়েছে। কানের চামড়ায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দশটি সেলাই পড়েছে। আহত গৃহবধূর চিকিৎসা চলছে গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে। এদিকে এই ঘটনায় আক্রান্ত পুত্রবধূ হামলাকারী শাশুড়ি তাজরিমিন বিবি এবং শ্বশুর মিরাজুল শেখের বিরুদ্ধে গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত শ্বশুর-শাশুড়ি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত গৃহবধূর নাম হাসনারা খাতুন (২৮)। তার দুই নাবালক ছেলেমেয়ে রয়েছে। সাত বছর আগে ওই গৃহবধূর বিয়ে হয় সরকার পাড়া এলাকার বাসিন্দা নাজির শেখের সঙ্গে। স্বামী নাজির শেখ পেশায় দিনমজুর। তাই অধিকাংশ সময় বাড়ির বাইরেই থাকেন তিনি। আর বাড়িতে হামেশাই পুত্রবধূ ও শাশুড়ির সঙ্গে নানান খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে বচসা চলছিল কয়েক মাস ধরেই।
আক্রান্ত গৃহবধূ হাসনারা খাতুন পুলিশকে অভিযোগে জানিয়েছেন, বাইরের কোনও মানুষের সঙ্গে কথা বললেই আমাকে সন্দেহের চোখে দেখে শ্বশুর-শাশুড়ি। এছাড়াও আমার মোবাইল ব্যবহার করা নিয়ে ওরা সন্দেহ করে। স্বামীর সঙ্গে প্রতিনিয়ত আমাকে মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতে হয়। সেটাতেও আপত্তি ছিল ওদের। এদিন সকালে মোবাইল চার্জ দেওয়া নিয়ে বচসা শুরু হয়। সেই সময় শ্বশুরের প্রত্যক্ষ মদতে শাশুড়ি তাজরিমিন বিবি আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মাটিতে ফেলে আমাকে কিল, চড়, ঘুসি মারে। শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা চালায়। এরপর ডান কান কামড়ে কেটে নেই। তখন আমি যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকি। আমার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
যদিও এই ঘটনার পিছনে অভিযুক্তদের সঙ্গে কোনো রকম ভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। গাজোল থানার আইসি রণবীর বাগ জানিয়েছেন, পারিবারিক বিবাদকে ঘিরে পুত্রবধূ ও শাশুড়ি গোলমালের একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।