যোশিমঠকে রক্ষা করতে সব রকম সাহায্য করার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। রবিবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামিকে ফোনে এই আশ্বাস দেন মোদি, এমনটাই জানিয়েছেন পুষ্কর সিং ধামি স্বয়ং। এদিন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংয়ের কাছে মঠের হালফিল অবস্থা সম্পর্কে টেলিফোনে খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী এবং আশ্রয়হীনদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন মোদি।
এদিকে ধর্মনগরী যোশিমঠের ভূমিধসের বিষয়টি ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখ্য সচিব পি কে মিশ্রের সভাপতিত্বে রবিবার পিএমওতে একটি বড় বৈঠকও হয়। এই বৈঠকে যোশিমঠের ইস্যু নিয়ে আলোচনাও হয়। যোশীমঠ সঙ্কটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র ছাড়াও বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের আধিকারিক সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এতে হাজির ছিলেন। তবে বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী মোদি রবিবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য চেয়ে পাঠান। আর তা নিজে ট্যুইট করে জানান সিএম ধামি স্বয়ং। ট্যুইটে তিনি লেখেন ‘যোশীমঠের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী টেলিফোনের মাধ্যমে কথা বলেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ এবং সমস্যা সমাধানে তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনার অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন।’ প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে যোশীমঠের পরিস্থিতি এবং এলাকায় সরকার কর্তৃক পরিচালিত নিরাপত্তা কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন এবং যোশীমঠকে বাঁচাতে সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, যোশিমঠে একে একে খালি করা হচ্ছে বাড়ি। হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডার মধ্যে একে একে ঘর ছাড়া হচ্ছেন একের পর এক পরিবার। ফাটল দেখা দেওয়ায় ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০০ বাড়ি খালি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যোশীমঠ প্রশাসন। গত শনিবার পরিস্থিতি বুঝে সেই তালিকায় যোগ করা হয় আরও ৬৫টি পরিবারকে। ১১টি পরিবারের আপাতত ঠাঁই হয়েছে অস্থায়ী শিবিরে। বর্তমানে, ফাটল বিপর্যয়ে ৬০৩টি বাড়ি খালি করছে প্রশাসন। এখানেই শেষ নয়, স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, এদিকে ফাটল দেখা দিয়েছে শঙ্করাচার্য মঠেও। পাশাপাশি যোশিমঠের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথও। উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার যোশিমঠ-মালারি বর্ডার রোড এই এলাকার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে চিনা বর্ডারের সঙ্গে। সীমান্তগামী সেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথের একাধিক জায়গায় দেখা দিয়েছে ধস। এই সড়কপথের বহু জায়গাতেই বড় বড় ফাটল তৈরি হয়েছে। তা নিয়েও চিন্তায় প্রশাসন। এদিকে শনিবারই বিশেষজ্ঞদের দল নিয়ে যোশীমঠের পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। এরপর দেহরাদুনে মন্ত্রী, আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকও করেন তিনি। এরপই রবিবার ছুটির দিন হলেও বিশেষজ্ঞ, আধিকারিকদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরও।