কর্মবিরতির পথে হাঁটলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে, বার্তা মন্ত্রী মানসের

ডিএ-এর দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মীরা কর্মবিরতির পথে হাঁটলে উন্নয়ন ব্যহত হবে। রবিবার ডিএ- নিয়ে যে পেন ডাউন কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে সেই সব সরকারি কর্মচারিদের এমনই বার্তা দিতে দেখা গেল রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারি সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মানস ভুঁইঞাকে। কারণ, বকেয়া মহার্ঘভাতা মেটানোর দাবিতে ২০ এবং ২১ তারিখ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ। এদিকে শনিবার এই প্রসঙ্গে নবান্ন থেকে দেওয়া হয়েছে কড়া নির্দেশিকা। এবার এই ইস্যুতে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা দিলেন র্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ। একইসঙ্গে মন্ত্রী মাস রঞ্জন ভুঁইঞা এও জানান, ‘সরকারি কর্মচারিদের একটি অংশ একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। তাঁরা মা মাটি মানুষের সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর বিষোদ্গার করছেন। একইসঙ্গে ২০ এবং ২১ তারিখ তাঁরা পেন ডাউন করছেন। সরকারের বিরোধিতা মানে সরকারি কাজের বিরোধিতা করা।’ এরই পাশাপাশি মানসবাবু এও জানান, ‘বেআইনিভাবে পেন ডাউন করা হচ্ছে। সরকারের কাজ বন্ধ থাকলে বাংলায় মানুষকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করা হবে।’ অর্থাৎ আন্দোলনকারীদের পদক্ষেপের জন্য রাজ্যবাসী সমস্যায় পড়বেন এংমই বার্তা এদিন দিতে দেখা গেল তাঁকে।  পাশাপাশি তিনি এও জানান, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বহু রাজ্য সরকারি কর্মীরা এই প্রতিবাদ করছেন। শুধু তাই নয় এই আন্দোলনকারীদের পেছনে বামেদের মদত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁদের প্ররোচিত করছে বিজেপিও। আর এরই রেশ ধরে মানস ভুঁইঞার বক্তব্য, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও ডিএ দেবেন না বলেননি। তিনি সহানুভূতির সঙ্গে বিষয়টি দেখেন। তবে  কেন্দ্র হাজার হাজার কোটি টাকা বঞ্চনা করেছে। ফলে রাজ্য প্রাপ্য অর্থ পাচ্ছে না। তা সত্ত্বেও রাজ্য বেতন, পেনশন , ডিএ দিচ্ছেন।’ এরই পাশাপাশি পরিসংখ্যআন তুলে ধরে তিনি জানান, ২০১১-১২ অর্থবর্ষ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের মধ্যে তিনি তিন পর্যায়ে ১ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা ডিএ-এ জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।

এদিকে , রাজ্য অর্থ দপ্তরের তরফ থেকেও এই পেন ডাউন কর্মসূচি নিয়ে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০ এবং ২১ তারিখ বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ছাড়া রাজ্য সরকারি কর্মীদেপ ছুটি মঞ্জুর করা হবে না। যদি উপযুক্ত কারণ ছাড়া এই দিনগুলিতে কোনও সরকারি কর্মী কাজে অনুপস্থিত থাকেন সেক্ষেত্রে তাঁকে শো কজ করা হবে। তিনি যদি শো কজের জবাব না দেন সেক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কড়া পদক্ষেপ। একইসঙ্গে এও বলা হয়েছে, এই দুই দিন হাফ-ডেও নেওয়া যাবে না।

এদিকে বকেয়া মহার্ঘ্যভাতা মেটানোর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আইনি লড়াই লড়ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। আপাতত এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এদিকে, রাজ্য বাজেটের দিন সরকারি কর্মীদের জন্য তিন শতাংশ বর্ধিত ডিএ-এর কথা ঘোষণা করেন স্বাধীন ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। যদিও এই ঘোষণার পর ক্ষোভ প্রশমনের পরিবর্তে আরও জোরাল আন্দোলনের পথে হাঁটার ডাক দিয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। তাঁদের মন্তব্য ছিল, কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রাপ্ত DA-র হারে বিপুল ফারাক রয়েছে। সেই জায়গায় মাত্র তিন শতাংশ DA বাড়িয়ে ‘ভিক্ষা দিয়েছে’ রাজ্য, দাবি তাঁদের। আগামী দিনে ডিএ-এর দাবিতে আরও বড় আন্দোলনের পথে হাঁটতে পারে রাজ্য সরকারি কর্মীরা, হুঁশিয়ারি একাধিক সংগঠনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three + eleven =