কলকাতা: গদি ওয়ালা বিছানা, এসির হাওয়া, মন পসন্দ খানা-পিনা সবই এখন অতীত।
প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন অন্যান্য বন্দিদের মতোই। অন্তত আইনের চোখে তেমনটাই। ইডি হেপাজতে তাঁর একটা ছোট খাট মিলেছিল। প্রেসিডেন্সিতে তাঁকে শুতে হল মাটিতেই কম্বল পেতে।
ইডির বিশেষ আদালত এসএসসি দুর্নীতিতে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে। শুক্রবার রাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে। কারা দপ্তরের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, সাধারণ বন্দির মতোই আচরণ করা হবে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে। জেলের পয়লা ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সেল-২ তে রাখা হয়েছে পার্থকে। সেটিকে আগে থেকেই পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছিল।
ইডি সূত্রে খবর, জেলে কোনও বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি পার্থকে। যে দু’নম্বর সেলে পার্থকে রাখা হয়েছে, সেখানে কোনও চেয়ার বা খাট নেই। রাতে মেঝেতেই কম্বল পেতে শুতে হয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রীকে। জেলের নিয়মানুসারে মোট চারটি কম্বল দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এগুলো মেঝেতে পেতেই রোজ শুতে হবে এবং এগুলিকেই বালিশ হিসাবে ব্যবহার করতে হবে। তবে এই সেলে কমোড রয়েছে। রাতে পেয়েছেন মিনারেল ওয়াটারের বোতল। আর সকালে প্রাতরাশে ছিল অন্যান্য বন্দিদের মতোই চা আর বাটার টোস্ট। তবে আজ, শনিবার যদি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারের তরফে কেউ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান, তাহলে সেই ব্যবস্থা থাকছে। পরিবারের কেউ এসে খাবার দিতে চাইলে দিতে পারেন, দিতে পারেন পোশাকও। এর বাইরে আর কোনও সুবিধা আপাতত পাবেন না পার্থ।
শুধু পার্থ নন, জেলে রয়েছেন পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। যাঁর দুটি ফ্ল্যাট থেকে অন্তত ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে, যাঁর নামে একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে, যাঁর সম্পত্তির কিনারা করতে হিমশিম খাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা, তাঁকেও থাকতে হচ্ছে আর পাঁচজন সাধারণ বন্দির সঙ্গে। বিলাসবহুল জীবনে অভ্যস্ত অর্পিতা ইডি হেফাজতে থাকাকালীন ড্রাই-ফ্রুট খাওয়ার আবদার করেছিলেন আধিকারিকদের কাছে। কিন্তু জেলে তাঁকে দেওয়া হবে সাধারণ ভাত-ডালই।
আদালতের নির্দেশে জেলে গিয়েও জেরা করতে পারবেন ইডি আধিকারিকরা। যে কোনও সময় গিয়ে পার্থ বা অর্পিতার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন তাঁরা।