পার্থর মুখে তৃণমূলের স্তুতি, জামিন পেলেন না পার্থ-কল্যাণময়

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সহ সাত জনকে হেফাজতের মেয়াদ শেষ হতেই বৃহস্পতিবার আদালতে ফের পেশ করা হয়। আদালতে হাজিরার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যের প্রথম থেকে শেষ লাইন পর্যন্ত শোনা গেল শুধুই তৃণমূল কংগ্রেসের নাম।গাড়ি থেকে নামার মুখে তিনি জানান, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের ২৫ তম প্রতিষ্ঠা দিবসে উপলক্ষে সকল কর্মী ও সহকর্মীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।নতুন বছরের শুভেচ্ছা, অভিনন্দন সকলকে। সবাই ভালো থাকুন।’ শুধু দল নয়, নিজের ভূতপূর্ব কেন্দ্র বেহালার বাসিন্দাদের শুভেচ্ছা জানান তিনি। জোকা থেকে তারাতলা  পর্যন্ত বহু প্রতীক্ষিত মেট্রোর শুভারম্ভ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।

দল তাঁর হাত ছাড়লেও তিনি দলকে ভোলেননি, ভুলছেন না বলেই ধারনা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।কারণ, প্রতি হাজিরার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে শুধুই তৃণমূলের কথাই শোনা যায়। দলের একান্ত অনুগত হিসেবেই বারবার তৃণমূলের সমর্থনেই আওয়াজ তুলেছেন দলের প্রাক্তন মহাসচিব।এর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিজেপি নেতাদের ‘ডিসেম্বর’ হুঁশিয়ারি নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।  দলের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের কেউ ক্ষতি পারবে না।’ এর আগেও অবশ্য তিনি আদালতে হাজিরার দিনে বলেছিলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলেরই জয় হবে।’প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি এদিন আদালতে হাজির করা হয় এসএসসি  ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন কর্তা কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শান্তিপ্রসাদ সিনহা , অশোক সাহাদের।

তবে এদিন নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়ে ফের ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি।এর আগেও নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় তদন্তকারীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাই কোর্ট। এবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের জামিনের মামলায় সিবিআই-এর ওপর বিরক্তি প্রকাশ করলেন বিচারপতি। সুবীরেশ ভট্টাচার্যের মামলার সঙ্গে কল্যাণময়ের মামলার কী যোগ আছে? আদৌ কোনও যোগ আছে কি না, সে বিষয়ে উত্তর দিতে গিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত দেখায় সিবিআইকে।

এদিন বিচারপতি সিবিআইয়ের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, আপনাদের তদন্তকারী অফিসার কোথায়? এই মামলায় এই ব্যক্তির নির্দিষ্ট ভূমিকা কী? উল্লেখ্য, সুবীরেশ ছিলেন এসএসসি-র চেয়ারম্যান আর কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান। নিয়োগের নিয়ম হল, এসএসসি প্রার্থীর নাম সুপারিশ করে ও প্রার্থীকে নিয়োগ পত্র দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এদিন বিচারপতির মূল প্রশ্ন ছিল, কমিশন যদি সুপারিশ করে, তাহলে পর্ষদের কি করার আছে? এর সদুত্তর না পেয়ে বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা একটু নিজেরা আগে বুঝুন। আমরা খুব দুঃখিত, এমন তদন্তকারীদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে। আপনাদের আইও-র সঙ্গে বসুন দয়া করে।’ পরে মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যের কথা শুনে বিচারপতি বুঝতে পারেন দুটো একই বিষয়, আলাদা নয়। এরপর এই মামলা মুলতুবি হয়ে যায়।এটাও স্পষ্ট হয়, আপাতত জামিন পাচ্ছেন না কল্যাণময়। প্রসঙ্গত, এর আগে সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘সিট’ বদলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − seven =