কলকাতা পুলিশের নোটিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ পরেশ রাওয়াল

কলকাতা পুলিশের নোটিশের বিরুদ্ধে একেবারে কলকাতা হাই কোর্টে পৌঁছে গেলেন রুপোলি পর্দাখ্যাত পরেশ রাওয়াল। ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’-কে নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের জেরে অভিনেতা পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল কলকাতা পুলিশে। আর তা করেছিলেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। আর সেলিমের দায়ের করা এই এফআইআর-এর ভিত্তিতে রুপোলি পর্দার অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা পরেশ রাওয়ালকে তালতলা থানা থেকে তাঁকে হাজিরা নোটিস পাঠানোও হয় কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে। প্রথমটায় হাজিরা এড়িয়েছিলেন ‘হেরা ফেরি’ খ্যাত এই  অভিনেতা। এবার কলকাতা পুলিশের এই হাজিরার নোটিসের বিরুদ্ধে সরাসরি আদালতের শরনাপন্নই হতে দেখা গেল তাঁকে। তালতলা থানার হাজিরার নোটিসকে আদালতে এবার চ্যালেঞ্জ জানালেন পরেশ রাওয়াল।

প্রসঙ্গত, মাছে-ভাতে বাঙালির অভ্যাস নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ২০২২-এর গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রচারে গিয়ে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধি ইস্যুতে বাঙালিদের নিয়ে একটি মন্তব্য করেন অভিনেতা। বলেছিলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বাড়লে তা আবারও সস্তা হয়ে যাবে। যদি মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পায়, তা কমে যাবে। মানুষ চাকরিও পাবেন। মুদ্রাস্ফীতির সমস্যা গুজরাটের মানুষ সহ্য করতে পারে। কিন্তু, যদি দিল্লির মতো রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিরা আপনার বাড়ির পাশে থাকতে শুরু করে, তাহলে গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে কী হবে? বাঙালিদের জন্য মাছ রান্না করবেন?’ এই মন্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই চরম ক্ষোভ জন্মায় বাঙালিদের মধ্যে। অসন্তোষ তৈরি হয় পরেশ রাওয়ালের এই মন্তব্য ঘিরে।

এরপরই পরেশ রাওয়ালের এই মন্তব্যের রেশ ধরে সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বর্ষীয়ান এই অভিনেতার বিরুদ্ধে তালতলা পুলিশ স্টেশনে এফআইআর দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে অভিনেতা পরেশ রাওয়ালকে ডেকে পাঠায় লালবাজার। শত্রুতা ছড়ানো, ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান করা, জনসমক্ষে বিদ্রুপ করার মতো একাধিক ধারায় পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। গত ১২ ডিসেম্বর পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে সমন জারি করে লালবাজার। এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে এও জানানো হয়, ৪১এ ধারায় অভিনেতার বিরুদ্ধে একটি সমন জারি করা হয়েছিল। তাঁকে তালতলা থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। সেই নোটিশের জবাবে লালবাজারে একটি মেল করেন পরেশ রাওয়াল। ‘হেরা ফেরি’ খ্যাত অভিনেতা তালতলা থানার তদন্তকারী অফিসারকে মেলে জানান, কলকাতায় হাজিরা দিতে তাঁর আরও ছয় সপ্তাহ সময়ের প্রয়োজন। এই মুহূর্তে তিনি অত্যন্ত ব্যস্ত রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 2 =