ধরো ক্যাচ জেতো ম্যাচ, ক্রিকেটের সহজপাঠ। তাই যদি ভুল করে বসেন কোনও তারকা, খেসারত তো দিতেই হবে। হলও তাই। সুমিত কুমারের স্লোয়ার বাউন্সারটা বুঝতেই পারেননি হরপ্রীত ব্রার। পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছিলেন। লোপ্পাই ক্যাচটা যে মিস করে ফেলবেন ডেভিড ওয়ার্নারের মতো ক্রিকেটার, কে বুঝবে! ঋষভ পন্থ ফিরলেন পুরো মাত্রায়, কিন্তু মরসুমের প্রথম ম্যাচটা হেরে বসল দিল্লি ক্যাপিটালস। বিশাল ছয় মেরে পঞ্জাবকে মোহালিতে জেতালেন লিয়াম লিভিংস্টোন।
মোহালির স্লো পিচে ১৭৫ তাড়া করা কখনওই সহজ ছিল না। বিশেষ করে যে টিমে কুলদীপ যাদব, অক্ষর প্যাটেলের মতো দু’জন অভিজ্ঞ স্পিনার। কুলদীপ ২ উইকেট তুললেন। অক্ষরও রান খরচ করলেন না। কিন্তু বাকিরা চাপটাই ধরে রাখতে পারলেন না। স্যাম কারান আর লিভিংস্টোনের জন্য। স্যাম এ বারের আইপিএলের প্রথম হাফসেঞ্চুরিটা করে গেলেন। ৪৭ বলে ৬৩ রানের কার্যকর ইনিংস খেলে গেলেন। আর লিভিংস্টোন ২১ বলে করে গেলেন নট আউট ৩৮।
গত কয়েক বছর দিল্লি সে ভাবে ছন্দ খুঁজে পায়নি। এ বারের আইপিএল মরসুমের প্রথম ম্যাচেও সেই ছন্দপতন। ডেভিড ওয়ার্নার আর মিচেল মার্শ শুরুটা ভালো করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু মোহালির পিচে উইকেটে না থাকলে রান করা মুশকিল। মার্শ ১২ বলে ২০ রান করলেন। ২১ বলে ২৯ রান ওয়ার্নারের। সাই হোপ করে গেলেন সর্বোচ্চ ৩৩। অক্ষর প্যাটেল ১৩ বলে ২১ করে ফেলেন। নিয়মিত উইকেট পড়া আটকাতে পারেননি দিল্লির ব্যাটাররা। তবে টিমকে ১৫০ পার করে গেলেন বাংলার কিপার-ব্যাটার অভিষেক পোড়েল। মাত্র ১০ বলে ৩২ রান করে গেলেন। হর্ষল প্যাটেলের শেষ ওভার থেকে নিলেন ২৫ রান। ২টো ছয় ও ৩টে চার মেরেছেন। অভিষেকের জন্যই ১৭৪-৯ তোলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দিল্লি।
এই ম্য়াচ যত না দিল্লির এ বারের আইপিএল শুরু, তার থেকে অনেক বেশি ছিল ঋষভ পন্থের। ৪৫৩ দিন পর ক্রিকেটে ফিরলেন। ২০২২ সালে ডিসেম্বর মাসের শেষে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়়েছিলেন। নিজেকে ফিট করে আবার ফিরলেন ক্রিকেটে। ব্যাট হাতে যখন নামলেন, সারা গ্যালারি তাঁকে কুর্নিশ জানাল। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে পন্থ মাত্র ১৩ বলে ১৮ করে ফিরলেন। মেরেছেন দুটো চার। শুরুতে একটু নড়বড়ে দেখালেও ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছিলেন। কিন্তু হর্ষল প্যাটেলের বলে জনি বেয়ারস্টোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন। নিজের শট নির্বাচনে অখুশি দেখাচ্ছিল পন্থকে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে এটুকুই লড়াই দেখা গেল। তবে, এই ম্যাচে চমকও দেখিয়ে গেলেন পন্থ। ব্যাটিং করবেন, ক্যাপ্টেন্সি করবেন, জানা ছিল। কিন্তু কিপিং করবেন, তা জানা ছিল না। জুন মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। পন্থকে যদি টিমে ঢুকতে হয়, শুধু ব্যাটিং করলে চলবে না, কিপিংও করতে হবে, তা বোর্ড পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে। তাই হয়তো আরও মরিয়া হয়ে কিপিং গ্লাভস হাতে নামলেন পন্থ। সবই হল, শুধু ম্যাচটা জেতা গেল না।