ফের চাল চুরির অভিযোগে উত্তেজনা পানাগড় বাজার হিন্দি হাইস্কুলে

নিজস্ব প্রতিবেদন, কাঁকসা: সোমবার ফের চাল চুরির অভিযোগে উত্তেজনা ছড়াল পানাগড় বাজার হিন্দি হাইস্কুলে। রবিবার পানাগড় বাজার হিন্দি হাইস্কুলে চাল চুরির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। এরপর সোমবার সকালে বিদ্যালয় খুলতেই এক এক করে ভিড় করেন এলাকার মানুষ ও অভিভাবকরা। সোমবার দুপুরে এলাকার বাসিন্দা ও অভিভাবকরা পানাগড় বাজার হিন্দি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রবিবারের চুরির অভিযোগ সামনে আসার পর, সোমবার বিদ্যালয় খোলার পরেও স্কুলের প্রধান শিক্ষক কোনও রকম আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। বিদ্যালয় থেকে চাল চুরির ঘটনা বিদ্যালয়ের একাংশ অভিযুক্ত বলে দাবি স্থানীয়দের। দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। একদল বিক্ষোভকারী প্রধান শিক্ষকের ঘর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখতে শুরু করেন। অপর দিকে একদল মানুষ বিদ্যালয়ের সিঁড়ির লোহার গ্রিলে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্থানীয়দের বিক্ষোভের জেরে বিদ্যালয় চত্বরে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে কাঁকসা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভ সামাল দেয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিড ডে মিলের রান্নার বিষয়ে গাফিলতির অভিযোগও তুলেছেন।
অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের অধিকাংশ ক্লাসের বোর্ডে ‘প্রধান শিক্ষক চোর’ বলে লিখলেন স্থানীয় ও পড়ুয়ারা। বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক নিয়মিত স্কুলে আসেন না। গোটা বিদ্যালয় আবর্জনা ও জল থই থই করছে। খাবার জায়গা অপরিচ্ছন্ন থাকায় নোংরার মধ্যেই তাদের মিড ডে মিলের খাবার খেতে হয়। এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। পানাগড় বাজার হিন্দি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জে কে পান্ডে জানিয়েছেন, মিড ডে মিলের স্টোর রুম সাফাই করার জন্য চালের বস্তা অন্যত্র সরিয়ে রাখা হচ্ছিল। সাফাই শেষ হলে পুনরায় চালের বস্তা রাখা হত সেখানে। কিন্তু মিড ডে মিলের যিনি দায়িত্বে ছিলেন মনমোহন সিং নামের সেই ব্যক্তি চালের বস্তা হাইস্কুলের বাইরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেটা তিনি জানতেন না। এই বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা সমিতির সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।
যদিও প্রধান শিক্ষকের সাফাই শুনতে নারাজ স্থানীয় সিপিএম নেতা হরজিত সিং। তাঁর অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক গোটা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তাই তিনি মিথ্যা কথা বলছেন। কারণ রবিবার সকালে চাল চুরির অভিযোগ যে সময় ওঠে, সে সময় যে ব্যক্তি স্কুলের চালের বস্তা কিনবে বলে এসেছিলেন, তা হলে বীরভূমের ওই চাল ব্যবসায়ী বিদ্যালয়ে কেন ঢুকেছিলেন। একই দাবি তুলেছেন কংগ্রেসের কাঁকসা ব্লকের সাধারণ সম্পাদক ধর্মেন্দ্র শর্মা। তাঁর অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক থানায় কোনও অভিযোগ জানাতে চাইছেন না, কারণ বিষয়টা তদন্ত হলে তিনিও ফাঁসবেন বলে। স্টোর রুম সাফাই হলে অন্য রুমে চালের বস্তা রাখা উচিত ছিল। কিন্তু স্কুল পরিচালনা সমিতি মনমোহন সিং নামে যাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিল মিড ডে মিলের, তিনি টোটোয় করে চালের বস্তা কেন বাইরে নিয়ে যাচ্ছিলেন।আর ওই টোটোর সঙ্গে যে চালের বস্তা কেনার জন্য ব্যবসায়ী কেন সঙ্গে এসেছিলেন, সেই প্রশ্নই তুলেছেন তিনি। এই বিষয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির যুব মোর্চার পক্ষ থেকে সোমবার কাঁকসার বিডিওর কাছে বিদ্যালয়ের চাল চুরির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। অন্যদিকে বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি কুলদীপ সিং ভিন রাজ্যে থাকার কারণে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 3 =