পাকুয়াহাট কাণ্ড: চার পুলিশ কর্তাকে ক্লোজ করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হল

বামনগোলা থানার পাকুয়াহাট কাণ্ডে দুই মহিলার ওপর চোর সন্দেহে নির্যাতনের ঘটনায় চার পুলিশ কর্তাকে ক্লোজ করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করল জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। পাশাপাশি পাকুয়াহাট কাণ্ডে নির্যাতিতা দুই মহিলা ইতিমধ্যে জাতীয় মহিলা কমিশন এবং তপশিলি জাতি ও উপজাতি কমিশনে সমস্ত ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। এদিকে, বামনগোলা থানার আইসি জয়দীপ চক্রবর্তী, পাকুয়াহাট পুলিশ ফাঁড়ির ওসি রাকেশ বিশ্বাস তদন্তকারী এক অফিসার এবং সংশ্লিষ্ট থানার এক এএসআইকে ক্লোজ করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ। বামনগোলা থানার চার পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়ায় জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের সাধুবাদ জানিয়েছে অনেকেই। জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ওই দুই মহিলাদের কাছে পুলিশ বয়ান রেকর্ডও করেছে। এদিকে পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদবকে এই ঘটনায় কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে দুই সপ্তাহের সময় দিয়ে চিঠি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
এই বিষয়ে শুক্রবার মালদা শহরের বাঁধ রোড এলাকায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উত্তর মালদা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু জানিয়েছেন, পুলিশ এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তার জন্যই তো ঘটনা ঘটার ৫ দিন পর তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আধুর রহিম বক্সী জানিয়েছেন, এটা বিজেপির মণিপুর নয়। এটা বাংলা। পুলিশ ও প্রশাসন সমস্ত ঘটনা তদন্ত করে দেখছে। বিজেপি শুধু প্ররোচনামূলক কথা বলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। উস্কানিমূলক কাজ যারা করছেন তাদের বিরুদ্ধেও পুলিশ ও প্রশাসন যাদের ব্যবস্থা নিক, সে দাবি ও দলের পক্ষ থেকে করা হবে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের মঙ্গলবার একটি দোকান থেকে টাকা চুরি অভিযোগে বামনগোলা থানার পাকুয়াহাটে দুই মধ্য বয়স্ক মহিলাকে বিবস্ত্র করে ব্যাপক গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার ছবি ৭২ ঘণ্টা পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তারপরই নড়েচড়ে বসে জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। নির্যাতিতা দুই মহিলার বাড়ি মানিকচক থানায় এলাকায়। ওই দুই মহিলা পাকুয়াহাটে লেবু বিক্রি করতে গিয়েছিলেন। মারধরের ঘটনায় বামনগোলা থানার পুলিশ ওই নির্যাতিতা দুই মহিলাকেই পরবর্তীতে জেলে পাঠিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। আর বিবস্ত্র অবস্থায় ওই দুই মহিলাকে মারধরের ছবি ভাইরাল হতেই রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিশ এখনো পর্যন্ত তিন মহিলা সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + 11 =