কুলদীপ-সূর্যর গোলাবারুদে ছারখার পাকিস্থান দল !

এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান লড়াই: আবারও ভারতের একতরফা জয়। যা হওয়ার ছিল তাই হল। ব্যস, এটুকু বলাই যথেষ্ট এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে। আবারও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অনায়াস জয় ছিনিয়ে নিল ভারত। কোনও প্রতিরোধই গড়তে পারল না পাকিস্তানি ব্যাটার-বোলাররা। বিশ্বকাপ হোক, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হোক কিংবা এশিয়া কাপ—সব বড় মঞ্চেই ভারত এখন ‘অপারেশন সফল’-এর মুখপাত্র। এবারের মঞ্চ দুবাই। সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বে ভারত ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিল পাকিস্তানকে, আর সেই সঙ্গে নিশ্চিত করল সুপার ফোরের টিকিট।

দুবাইয়ের এই লড়াইকে ঘিরে আলাদা আবেগ কাজ করছিল ভারতীয়দের মনে। পহেলগাঁও জঙ্গিহানার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেটীয় সম্পর্ক রাখা নিয়েই বিতর্ক চলছে। তবে মাঠে নামার পর ভারতীয়রা যেন একটাই বার্তা দিল—পাকিস্তান প্রতিপক্ষ ছাড়া আর কিছুই নয়। কোনও বাড়তি সৌজন্য নয়, হাত মেলানো নয়—শুধুই জয়ের লক্ষ্য। ব্যাটে-বলে সেই পরিকল্পনা নিখুঁতভাবে কার্যকর করল সূর্যকুমার-কুলদীপরা।

ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার টসে হেরে যান, তবে সেটাই শেষবার ছিল পাকিস্তানের হাসি। প্রথম ওভারেই হার্দিক পাণ্ডিয়ার শিকার ওপেনার সাইম আয়ুব। দ্বিতীয় ওভারে জশপ্রীত বুমরাহ আউট করেন মহম্মদ হ্যারিসকে। এরপর খানিকটা চেষ্টা করলেও পাওয়ার প্লের পরই ধসে পড়ে পাক ব্যাটিং অর্ডার। অধিনায়ক সলমন আলি আঘা মাত্র ৩ রানে ফিরে যান। হাসান নওয়াজ ও মহম্মদ নওয়াজও এক অঙ্কের রানে আউট হন। একমাত্র ব্যাট হাতে কিছুটা প্রতিরোধ দেন সাহিবজাদা ফারহান, যিনি ৪০ রান করেন।

ভারতীয় স্পিনাররা দাপট দেখান। কুলদীপ যাদব নেন ৩ উইকেট, অক্ষর প্যাটেলের দখলে ২ উইকেট, আর একটি পান বরুণ চক্রবর্তী। পেস আক্রমণে জশপ্রীত বুমরাহ ফেরান আরও দুই ব্যাটারকে। একসময় মনে হচ্ছিল, শতরানেই গুটিয়ে যাবে পাকিস্তান। কিন্তু শাহিন শাহ আফ্রিদির ১৬ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস দলকে ১২৭ রানে পৌঁছে দেয়।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও ভারত পাকিস্তানকে ‘বিখ্যাত’ ফিল্ডিং দেখানোর সুযোগ দেয়। তিলক বর্মা যখন মহম্মদ নওয়াজের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দেন, তখন তা ছেড়ে দেন পাক স্পিনার। যদিও অল্প সময় পরেই সাইমের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিলক (৩১)। তবে এতে কোনও প্রভাব পড়েনি ম্যাচে। সূর্যকুমার যাদব দায়িত্ব নেন ম্যাচ শেষ করার। মাঝপথে হাঁকান একটি ৯০ মিটারের বিশাল ছক্কা। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে, ২৫ বল বাকি রেখেই ভারত জয় ছিনিয়ে নেয়।

এই ম্যাচে ভারতের জয় শুধু ক্রিকেটীয় প্রাধান্য নয়, প্রতীকী বার্তাও বয়ে নিয়ে এল। গত কয়েক বছরে পহেলগাঁও হামলা, অপারেশন সিঁদুর, পাকিস্তানের সঙ্গে খেলতে ভারতীয়দের আপত্তি—এসব আলোচনার মাঝেও একটি বিষয় স্পষ্ট থেকেছে। এশিয়া কাপের মঞ্চে পাকিস্তানের কাছে ভারতের আত্মসমর্পণ হয়নি, বরং উল্টোটাই ঘটেছে বারবার। এবারের জয়ও সেই ধারাবাহিকতাই ফের স্পষ্ট করল।
সারকথা, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে যত আবেগই থাকুক, ক্রিকেট মাঠে ভারত এখন পাকিস্তানের একতরফা ‘প্রতিপক্ষ নিয়ন্ত্রক’। আর এই জয় ভারতীয় ক্রিকেটের আত্মবিশ্বাসকে আরও একধাপ উপরে তুলে দিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 6 =