নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম জয় পেল পাকিস্তান

টানা দুই ম্যাচে হারার পর পাকিস্তানের বিদায়ী এপিটাফটা লিখেই দিয়েছিলেন শোয়েব আখতার–ওয়াসিম আকরামরা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ বলে হারের পর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অসম ম্যাচেও তাই অদৃশ্য এক চাপে ছিলেন বাবর আজমরা। সেই চাপটা বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিয়ে কিছুটা হলেও কমিয়েছে পাকিস্তান।

সে সঙ্গে আগের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের নাটকীয়ও জয়ও বাবরদের জন্য লড়াইয়ের ভিতটা আরেকটু মজবুত করেছে। পার্থে দিবা–রাত্রির ম্যাচে ডাচদের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় ৬ উইকেটে। টস জিতে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ৯১ রানে থামে নেদারল্যান্ডস। এটি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে পুরো ২০ ওভার ব্যাট করে কোনো দলের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। রান তাড়ায় ৩৭ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। আগে বাংলাদেশ পরে ভারত– আজ দুই প্রতিবেশির জয়ই প্রত্যাশা করে মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান। জিম্বাবুয়ের কাছে বাংলাদেশের হেরে যাওয়া মানেই যে বাবর–রিজওয়ানদের টিকে থাকার স্বপ্নটা আরও ধূসর হয়ে যাওয়া। শেষ মুহূর্তে নো–বলের নাটকীয়তা দেখে থাকলে নিশ্চিত স্নায়ুচাপে ভুগেছে পাকিস্তানি খেলোয়াড়েরা।
মাঠে অবশ্য চাপের কোনো ছাপ ছিল পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের ওপর। আগের দুই ম্যাচে কাছাকাছি গিয়ে হারের হারের ঝাল ডাচদের ওপরই মিটিয়েছে পাকিস্তান। বিশেষ করে আগে বোলিং করে প্রতিপক্ষকে ব্যাটসম্যানদের রীতিমতো নাকাল করে ছেড়েছেন শাহিন–শাদাবরা।

বেঁচে থাকার জন্য প্রাথমিক যেটুকু অক্সিজেন প্রয়োজন ছিল সেটা পেয়ে গেল পাকিস্তান। কিন্তু এরপর তাদের টিকে থাকার আসল লড়াই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তাতে সন্দেহ নেই। অধিনায়ক বাবর জানিয়ে গেলেন আমরা আজকের পর হাতে থাকা দুটি ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। এর বেশি ভেবে চাপ বাড়াতে চাই না। বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয় চাই। বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট দলকে টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে তাই রবিবার জিততেই হত নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ডাচরা। শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, ওয়াসিম জুনিয়র এবং হ্যারিস রউফ – এই চার পেসারকে প্রথম থেকেই লেলিয়ে দিল পাকিস্তান।

বাউন্সি উইকেটে প্রথম থেকেই গতির ঝড় তুললেন পাক পেসাররা। ১৪৫- ১৫০ কিলোমিটার গতিতে আগুনের গোলা আছড়ে পড়ছিল কমলা জার্সিধারীদের ওপর। হ্যারিসের বলে হুক করতে গিয়ে চোখে আঘাত পেলেন ডি লিড। হেলমেটের গ্রিল ভেঙে ঢুকে গেল বল। তবে ভাগ্য ভাল, তার চোট খুব বেশি গুরুতর হয়নি। ফিজিও দেখার পর নিয়ে গেলেন বাইরে। এটা বাদ দিলেও পাকিস্তানি পেসারদের দাপটে ডাচ ব্যাটসম্যানদের অবস্থা ছিল রীতিমতো খারাপ।

পাকিস্তানের পেসার হ্যারিস রউফ ম্যাচ শুরুর আগে বলেছিলেন, সমর্থকদের মতো আমরাও আঘাত পেয়েছি। প্রতিযোগিতা এখনও শেষ হয়নি। আমরা এখান থেকেও ঘুরে দাঁড়াতে পারি। পাকিস্তানের পেস বোলিং আবার প্রমাণ করল কেন তারা টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে চারটি উইকেট নিলেও ওয়াসিম জুনিয়র সেদিন পাকিস্তানকে জয় এনে দিতে পারেননি। আজ নেদারল্যান্ডস দলের বিপক্ষে মনে রাখার মত স্পেল করলেন তিনি। নিলেন দুটি উইকেট।

ছোট টার্গেট হলেও এই উইকেটে রান তোলা মোটেও সাহস ছিল না দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। বল থমকে থমকে আসছিল দ্বিতীয় ইনিংসে। রিজওয়ান সেট হয়ে গিয়েও আউট হয়ে গেলেন মিকৃণের বলে। তার সংগ্রহ ৪৩। এলেন ইফতিকার। তবে ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। শান মাসুদ ফিরে গেলেন ১২ করে। শাদাব মারলেন উইনিং শট।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five − two =