বন্যায় ভাসছে পাকিস্তান, মৃত ৯৩৭, দেশে জারি জরুরি অবস্থা

লাগাতার বৃষ্টি আর তার জেরে বন্যায় বিধ্বস্ত পাকিস্তান। এ বছর এখন পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশে বন্যার মারা গিয়েছেন ৯৩৭ জন। মৃতদের মধ্যে ৩৪৩ জন শিশু রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গোটা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান সরকার।গত ৫০ বছরে এমন ভয়াবহ বন্যা (Flood) পরিস্থিতি কখনও হয়নি পড়শি দেশে। এবার অতিবর্ষণের কারণে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে তা পাকিস্তানকে গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।

বন্যায় বালুচিস্তানে মারা গিয়েছেন ২৩৪ জন। খাইবার পাখতুনখোয়ায় ১৮৫ জন এবং পঞ্জাব প্রদেশে মারা গিয়েছেন ১৬৫ জন। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে বন্যায় মৃত ৩৭ জন। গিলগিট-বালতিস্তানে মারা গিয়েছেন ন’জন।  স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ২৪১ শতাংশ বেশি। সিন্ধ প্রদেশে স্বাভাবিকের থেকে ৭৮৪ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

১৪ জুন থেকে পাকিস্তানে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তার জেরে বিভিন্ন জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। হড়পা বানে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের দক্ষিণের বহু জেলা। সিন্ধ প্রদেশের ২৩টি জেলা জলমগ্ন। বন্যার জেরে সব থেকে বেশি মৃত্যু হয়েছে সিন্ধ প্রদেশে। ১৪ জুন থেকে বৃহস্পতিবার ওই প্রদেশে বন্যায় মারা গিয়েছেন ৩০৬ জন।

পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের মন্ত্রী শেরি রহমান জানিয়েছেন, তিন কোটি পাকিস্তানবাসী এখন ঘরছাড়া। হাজার হাজার মানুষ খেতে পাচ্ছেন না। ত্রাণের জন্য ‘ওয়ার রুম’ তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। আন্তর্জাতিক মহলেরও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া দরকার বলে মত রহমানের।

এমনিতেই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। তারমধ্যে এই বন্যা মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবেই মনে করছেন অনেকে। কারণ বন্যার কারণে চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সেদেশে। সেইসঙ্গে বিরাট অঙ্কের সম্পদও নষ্ট হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কত সময় লাগবে তার ঠিক নেই। এরমধ্যে বৃষ্টি থামারও কোনও শুভ সঙ্কেত দিতে পারেনি আবহাওয়া দপ্তর। তারা বলেছে সেপ্টেম্বরের গোড়া পর্যন্ত বৃষ্টিপাত চলবে। ফলে নতুন করে বহু এলাকা বন্যা কবলিত হতে পারে সেই আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − 6 =