রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টির জেরে ভয়ঙ্কর বন্যায় ভেসে যাচ্ছে পাকিস্তান। গত ৩০ বছরের সব রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। সোমবার (২৯সোমবার সেই দেশের জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শেরি রেহমান জানিয়েছেন, পাকিস্তানের এক তৃতীয়াংশ এলাকাই এখন জলের নীচে। ফলে এক ‘অকল্পনীয় সংকট’ তৈরি হয়েছে। বন্যার প্রকোপ যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে মৃত্যু। রবিবারই বৃষ্টি ও বন্যাজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল, সোমবার তা দাঁড়িয়েছে ১,০৬১-এ।
এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত পাকিস্তানিদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার, এক টুইট বার্তায় তিনি পাকিস্তানের বন্যার ধ্বংসলীলার বিষয়ে শোকপ্রকাশ করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ‘দ্রুত স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধারের’ আশা প্রকাশ করেছেন। টুইট করে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘পাকিস্তানে বন্যার কারণে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ দেখে ব্যথিত। নিহত, আহত এবং এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সকলের পরিবারের প্রতি আমরা আন্তরিক সমবেদনা জানাই এবং স্বাভাবিক অবস্থার দ্রুত পুনরুদ্ধারের কামনা করি।’
Saddened to see the devastation caused by the floods in Pakistan. We extend our heartfelt condolences to the families of the victims, the injured and all those affected by this natural calamity and hope for an early restoration of normalcy.
— Narendra Modi (@narendramodi) August 29, 2022
পাকিস্তানের বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং বালুচিস্তান প্রদেশ। পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বালুচিস্তান প্রদেশের জন্য ১০০০ কোটি পাকিস্তানি টাকার ত্রাণ ঘোষণা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে জাতীয় ত্রাণ তহবিল এবং বেনজির আয় সহায়তা প্রকল্প থেকে ২৫০০০ পাকিস্তানি টাকা করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি অনুদান হিসেবে আরও ৩৮০০ কোটি পাকিস্তানি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
বন্যার এই ভয়াল রূপে তিনি আতঙ্কিত বলে জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। শেহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘খাইবার পাখতুনখোয়ায়, মুষলধারে বৃষ্টির ফলে সোয়াত এবং কালামে নদী এবং খালগুলি ফুসে উঠেছে, চোখের পলকে হোটেল এবং বাড়িঘর ভেসে গিয়েছে। বন্যা এবং অবিরাম বর্ষণে যে ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্ট হয়েছে, তা ভয়াবহ।’ সোমবার হেলিকপ্টারে করে, সিন্ধ ও বেলুচিস্তান প্রদেশের বন্যা কবলিত এলাকাগুলির পরিদর্শন করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে আকাশপথে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার কার্যক্রমেও অংশ নেন। সেনাদের প্রস্তুতির খোঁজ খবর নিতে, এদিন বন্যা কবলিত প্রদেশগুলি পরিদর্শন করেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার বাজওয়াও। সিন্ধের খায়রপুর এবং কাম্বার-শাহদাদকোট এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গেও দেখা করেন। বন্যায় আটকে পড়া বাসিন্দাদের হেলিকপ্টারে করে নিরাপদ স্থানে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।