২৩ একর জমির মালিক গোপাল, খুলতে চেয়েছিলেন বিএড, ডিএলএড কলেজও

ঠিক কী কাজ করতেন গোপাল দলপতি তা জানা না থাকলেও এই গোপাল দলপতি-ই ২৩ একর জমির মালিক। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআই গোপাল দলপতি ও তাঁর স্ত্রী হৈমন্তীর নামে এমনই এক ২৩ একর জমির সন্ধান পেয়েছে বলে সূত্রে খবর।

সূত্রে খবর, চিট ফান্ড সংস্থা দিয়ে গোপালের কর্মজীবন শুরু। এরপর ২০১২ সাল থেকে জমি কিনতে থাকেন গোপাল। আর এই জমি দিয়ে কালো টাকা সাদা করার শুরু সেখান থেকেই। তবে, সেই কারসাজি বেশিদিন পুলিশের চোখের আড়াল থাকেনি। এর কিছুদিন পরেই দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার করা হয় গোপালকে। এই ঘটনার বছর খানেক পরে ২০১৪ সাল নাগাদ তাপস মণ্ডলের সঙ্গে পরিচয় হয় গোপালের। এরপরই চিট ফান্ডের ব্যবসা থেকে সরে আসেন।

এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, সেই সময় গোপাল ঠিক করেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরে বি এড, ডি এল এড-এর এক কলেজ তৈরি করবেন। সেই কলেজ তৈরির জন্যেই তাপস মণ্ডলের সঙ্গে আলাপ করতে যান তিনি। কলেজ তৈরির প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে গোপালকে নাকি আট লক্ষ টাকাও দেন। তবে নানা কারণে এই কলেজ আর তৈরি করে উঠতে পারেননি গোপাল। তখন কর্মহীন গোপালকে নিজের মহিষবাথানের অফিসে কাজের সুযোগ দেন তাপস। এরপর সেখানে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া টাকার হিসেব রাখাই পেশা হয়ে যায় গোপালের। শুধু তাই নয়, গোপাল নিজেও জনা চারেক চাকরি প্রার্থীকে নিয়ে যান তাপস মণ্ডলের কাছে। তাপস সেই কাজ না করে দেওয়ায় কুন্তলের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন গোপাল। তাপস-কুন্তলের এই নিয়োগ দুর্নীতি চক্রের যাবতীয় তথ্য জানতে এবার গোপাল দলপতির সম্পত্তির উপরে বিশেষ নজর রেখেছে সিবিআই। আর এই সূত্রেই সিবিআই-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় গোপালের প্রায় ২৪ টি জমির খোঁজ পেয়েছেন তাঁরা। বেশিরভাগ জমি গোপালের স্ত্রী  হৈমন্তী এবং তাঁর কোম্পানির নামে।

এত জমি কেনার টাকা কোথা থেকে পেয়েছিলেন গোপাল তাও গোপালকে জিজ্ঞেস করে সিবিআই। তবে তার উত্তরে ছিল যথেষ্ট অসঙ্গতি। এছাড়াও কিছু জমি বিক্রির টাকাও রয়েছে। সেই টাকা কোথায় গেল তারও খোঁজ করে দেখছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। এখানে এ প্রশ্নও উঠছে, তাহলে গোপাল দলপতির কাছেই নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা গিয়েছিল কি না তা নিয়ে। এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই গোপাল দলপতির স্ত্রী হৈমন্তী গাঙ্গুলির মুম্বইয়ের সংস্থার অ্যাকাউন্টে ৬৮ লক্ষ টাকার হদিস পেয়েছেন গোয়েন্দারা। আরেকটি অ্যাকাউন্টেও ১২ লক্ষ টাকা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − fifteen =