ছুটির দিনগুলিতে মালদার মিনি দিঘায় উপছে পড়ছে পর্যটকদের ভিড়। মালদা জেলা হোটেল অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহের শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত তিন দিনের ছুটিতে মালদায় পর্যটকদের যে পরিমাণ ভিড় হয়েছিল তা গত দুই দশকে নজিরবিহীন। হোটেল সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, মালদায় প্রশাসনের অনুমোদন প্রাপ্ত হোটেলের সংখ্যা প্রায় ৫০। যার কোনো রুম ফাঁকা ছিল না গত সপ্তাহের ছুটির দিনগুলিতে। বাইরে থেকে ঘুরতে আসা মানুষের লক্ষ্য একটাই ছিল মালদার মিনি দিঘা। পাশাপাশি আদিনা ডিয়ার ফরেস্ট এবং ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র গৌড় ঘুরেছেন পর্যটকেরা। কিন্তু তার বাইরে উদ্দেশ্য মিনি দিঘা। কি এই মিনি দিঘা? পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাটরা এলাকায় অবস্থিত কয়েক হাজার একর জমির এখন বৃষ্টি এবং নদীর জল প্রবেশ করে সমুদ্রের আকারে পরিণত হয়েছে। যার এপার থেকে ওপার কিছুই দেখা যায় না। ঝোড়ো হাওয়ার ফলে সেই বিশাল জলাশয় ঢেউয়ের চেহারাও নিয়েছে। নৌকো-বিহার চলছে। আর এটাই এখন মানুষের কাছে মিনি দিঘায় পরিণত হয়েছে। মালদা জেলার আশেপাশের জেলা থেকেও মানুষ আসছেন মিনি দিঘায় ঘুরতে। রীতিমতো সেখানে পুলিশের নজরদাঁড়ি বাড়ানো হয়েছে। গ্রামের হঠাৎ করে পরিবেশ পাল্টে যাওয়ায় বেড়েছে কর্মসংস্থান। ফাস্টফুডের দোকান থেকে আরও যাবতীয় বেশ কিছু দোকান গড়ে উঠেছে সেখানে।
মালদার এই ভাটরা বিল পর্যটকের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মালদা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ভাটরা বিল। বর্ষার সময় বৃষ্টির জলে ভরে যায় এই বিল। আবার গ্রীষ্মের সময় এই বিলে আর জল থাকে না।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থেকে মালদায় ঘুরতে এসেছিলেন সরকার দম্পতি। পরিবারের গৃহকর্তী প্রভাতী সরকার বলেন, মিনি দিঘার নাম শুনেছি। তাই মনের মধ্যে আগ্রহ ছিল সেটি দেখার। যতটা ভেবেছিলাম তার থেকে অনেক বেশি আনন্দ উপভোগ করেছি। পর্যটকদের দাবি, এই ভাটরা বিল থেকে পর্যটন হিসাবে গড়ে তোলা হোক। পাশাপাশি এই ভাটারা বিলটি যাওয়ার রাস্তাটিও সংস্কার করা হোক।
এ প্রসঙ্গে জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, দিনে দিনে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই ভাটরা বিল। তাই পর্যটকদের দেখতে যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে আমরা বিভিন্ন বিষয় দেখছি। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। আর ভাটরা বিলে যেতে যে রাস্তাটি রয়েছে, সেটিও বর্ষার পর সংস্কারের উদ্যোগ না হবে।