আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় রীতিমতো উত্তাল বঙ্গ রাজ্য রাজনীতি। বড়তলা থানার পুলিশ ভোররাতে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দীর্ঘ তল্লাশি চালানোর পর গ্রেপ্তার করে। এরপরই স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর এদিন তাঁকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়।
তবে এদিনের কৌস্তুভের এই গ্রেপ্তারির পর থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে বাম এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী রাজ্য পুলিশের তুমুল সমালোচনা করেন। তিনিজানান, ‘মুখ্যমন্ত্রী সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। আমরা কৌস্তভের পাশে রয়েছি। ওর গোটা পরিবারকে ভোর থেকে ঘিরে রাখা হয়েছে। এমন করছে যেন কোনও উগ্রপন্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ’একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘কংগ্রেস ওর পাশে রয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করব।’ অন্যদিকে, কৌস্তভের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাম নেতারাও। সুজন চক্রবর্তী একটি ভিডিয়ো বার্তায় জানান, ‘বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কৌস্তভকে। স্বৈরাচারের সমস্ত লক্ষণ স্পষ্ট।’ একইসঙ্গে এ প্রশ্নও তোলেন, ‘শ্লীলতাহানির মতো অপরাধ কি জলভাত হয়ে গেল? যারা অপরাধের শিকার তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘সাগরদিঘিতে কংগ্রেস জিতেছে। তারপরেই জোর করে একটা কেস দিয়ে দিল।সাগরদিঘির পর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাই এই ধরনের স্বৈরাচারী মনোভাব ফুটে উঠছে।’
অন্যদিকে, বাম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য একটি সোশাল মিডিয়া পোস্টে এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করেন। বিকাশ একটি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, এইমাত্র খবর পেলাম, আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। শুনলাম রাত তিনটে নাগাদ তাঁকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে মন্তব্যের জন্যই এই গ্রেপ্তার। আবারও প্রমাণ হল মোদি -মমতা এক বাগানের ফুল। অবিলম্বে কৌস্তুভের মুক্তির দাবি করছি।’
এদিকে কৌস্তভের এই গ্রেপ্তারিরর পর থেকেই বড়তলা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কংগ্রেস কর্মীরা। কৌস্তুভের মুক্তির দাবি তোলেন তাঁরা। সোশাল মিডিয়াতেও তাঁর মুক্তির জন্য হ্যাচট্যাগ ট্রেন্ড চালানো হচ্ছে। আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলন যেতে পারে কংগ্রেস, সূত্রের খবর এমনটাই। এদিকে কৌস্তভের গ্রেপ্তারির প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ জানান, ‘কেউ শুরু করলে তার উত্তর দেওয়াটা স্বাভাবিক। তবে সবকিছুর একটা সীমা থাকা উচিত। ওর কাছে যদি কোনও তথ্য থাকে সেক্ষেত্রে তা সামনে নিয়ে আসা উচিত।‘
তবে কৌস্তুভের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে করা মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করতে দেখা যায় তৃণমূল নেতা পার্থ ভৌমিককে। এই প্রসঙ্গে পার্থ ভৌমিক এও জানান, ‘কোনও শিক্ষিত ব্যক্তি এই ধরনের কটূক্তি করবেন না।’ এরই পাশাপাশি কৌস্তভকে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শও দেন। এই প্রসঙ্গে পার্থ এও বলেন, ‘এই ধরনের মন্তব্য করে কিছু সময়ের জন্য লাইমলাইটে আসা যায়। কিন্তু, মজবুত রাজনীতিবিদ হওয়া যায় না।’