কালজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ১০২তম জন্মদিন ২ মে। উল্লেখ্য, ১৯২১ সালের ২ মে কলকাতায় জন্ম হয় সত্যজিৎ রায়ের। এই বিশেষ দিনে বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়ির দরজা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় অস্কারজয়ী পরিচালককে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। এদিন রায় বাড়িতে হাজির হতে দেখা যায় সর্বস্তরের মানুষজনকেই। ২০২২ সালে কোভিড আবহেদূরত্ববিধি মেনে ঘরোয়াভাবে সত্যজিতকে কুর্নিশ জানানো হয়েছিল। একতলায় সত্যজিৎ রায়ের ছবি ফুলের মালা দিয়ে সাজানো হয়েছিল। তবে এ বছর আবার পুরনো মেজাজে সেজে ওঠে রায় বাড়ির অন্দরমহল। খুলে দেওয়া হয় রায় বাড়ির দরজা।
সত্যজিৎ রায়ের জন্মবার্ষিকী পালন প্রসঙ্গে সত্যজিৎ পুত্র সন্দীপ রায় বলেন, ‘আমরা কোনও বছরেই পরিকল্পনা করে কিছু করি না। বাড়ির দরজা খোলা থাকে। সকলে আসে। এবারেও তেমনটাই হয়েছে।’ পাশাপাশি এদিন তিনি জানান, ‘গত বছর একতলার একটি ঘর খুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার দোতলায় উঠতে পারছেন লোকজন। বাবার ঘর কখনওই খোলা হয় না। বাবার ঘরের পাশের কামরায় তাঁর ছবি দিয়ে সাজানো হয়। এবারও সেটা করা হয়েছে।’ তবে সত্যজিতের পুত্রবধূ ললিতা রায় জানান, ‘রান্নার জন্য আমাদের ঠাকুর আছে। বাবার জন্মদিনে তাঁর পছন্দের জিনিসপত্র রান্না করা হয়। এবারও তাঁরাই রান্নাবান্না করছেন। ছোট করে যেটুকু করা যায়।’
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, সত্যজিৎ রায় জীবিত থাকাকালীনও তাঁর জন্মদিনে রায় বাড়ির দ্বার অবারিত থাকত অনুরাগীদের জন্য।এদিন একবার দেখা করার জন্য অনেকেই পৌঁছে যেতেন বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়িতে। গমগম করত রায় বাড়ি। অতিথিদের আপ্যায়ন করা হতো জিলিপি, সিঙারা, খাস্তা কচুরি খাইয়ে। তবে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন ভিড়ে না যাওযার জন্যই তাই শেষের দিকে ১ মে বাড়ির বাইরে চলে যেতেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে হোটেলে জন্মদিন সেলিব্রেট করতেন।
এখানে ছোট্টর করে একটু বলতেই হয় মাত্র দু বছর বয়সে পিতৃহারা হন সত্যজিৎ। ১৯২৩ সালে সত্যজিতের বাবা সুকুমার রায়ের জীবনাবসান ঘটে। মা সুপ্রভা রায় তাঁকে মানুষ করেন। ১৯৪৩ সালে এক ব্রিটিশ অ্যাডভারটাইজিং কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন সত্যজিৎ রায়। সিনেমা বরাবরই ভালোবাসতেন। ইলাস্ট্রেশনের কাজও করতেন। ১৯৪৪-এ পথের পাঁচালীর কভার ইলাস্ট্রেশনের কাজ করেছিলেন। বিভূতভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পকে সেলুলয়েডে আনার অদম্য ইচ্ছে তৈরি হয় তাঁর মনে। বাকিটা ইতিহাস।