ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠা দিবসে মঞ্চে যেন টিম গেম

ইস্টবেঙ্গল ক্লাব ১০৩ পেরিয়ে ১০৪-এ পা দিল। ক্লাবের ১০৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হল মহাধুমধামেই। অস্বস্তি তৈরি করল বৃষ্টি। অনুষ্ঠানটি হয় ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। অনুষ্ঠানের পর বৃষ্টিতে ব্যাপক সমস্যায় পড়ে সকলেই। ইস্টবেঙ্গলের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার বাকি দুই প্রধানের কর্তা এবং বাংলা ফুটবল সংস্থার কর্তা, সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার সভাপতি কল্যাণ চৌবে, সচিব শাজী প্রভাকরণ এবং কলকাতা ময়দানের বিশিষ্ঠ ফুটবলাররা। ইস্টবেঙ্গলের তরফে কিছুদিন আগেই ঘোষণা করা হয়, এ বার ভারত গৌরব সম্মান দেওয়া হবে শিল্পপতি রতন টাটাকে। ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তবে রতন টাটা উপস্থিত থাকতে পারবেন কিনা সন্দেহ ছিল। শারীরীক অসুস্থতায় তিনি আসতে পারেননি। ক্লাবের তরফে রতন টাটাকে নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত তথ্যচিত্র দেখানো হয়। রতন টাটা ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের বলেছেন, তিনি একটা তারিখ জানিয়ে দেবেন। সে দিন মুম্বইয়ের অফিসে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা তাঁকে এই সম্মান তুলে দেবেন। এ বছর বেশ কিছু নতুন পুরস্কার শুরু হয়েছে। গোপাল বোস মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড পেলেন তরুণ ক্রিকেটার অঙ্কুর পাল। তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য তথা সিএবির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ড অভিষেক ডালমিয়া এবং ক্রিকেট কোচ আব্দুল মুনায়েম। স্বপন বল নামাঙ্কিত সেরা সাপোর্টার অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় প্রদীপ দাস এবং সাগ্নিক ব্যানার্জিকে। একজন দৃষ্টিহীন, নিয়মিত ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে থাকেন। তবে খেলা দেখা হয়নি, শোনার মধ্যেই দেখেছেন। আর একজন দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই দু-জন সেরা সমর্থকের পুরস্কার পেলেন। দৃষ্টিহীন প্রদীপ দাস, পুরস্কারগুলো ছুঁয়ে অনুভব করলেন। ওপার বাংলার ফুটবলারদের বিশেষ সম্মান ইস্টবেঙ্গলের তরফে। মঞ্চে ডাকা হয় ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমকে। বাংলাদেশের ফুটবলার মুন্না, যিনি ইস্টবেঙ্গলে খেলেছেন, প্রয়াত সেই তারকার পরিবারকে বিশেষ সম্মান জানানো হয়। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ক্লাবের ইনভেস্টর ইমামি কর্তারাও। সব মিলিয়ে যেন টিম গেম। আর তাতে সিনিয়র টিমের কোচ না থাকলে হয়! মঞ্চে ডাকা হয় ইস্টবেঙ্গলের নতুন স্প্যানিশ কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতকেও। তিনি মঞ্চে আসতেই বাড়তি উন্মাদনা। সমর্থকদের আশ্বস্ত করলেন, সর্বস্ব দিয়ে ভালো ফলের চেষ্টা করবেন নতুন মরসুমে। সেরা উঠতি প্রতিভার পুরস্কার জিতে নাওরেম মহেশও বলছেন, ‘অনুভূতিটা প্রকাশ করতে পারব না। আমরা হয়তো সেই অর্থে সাফল্য পাইনি। তবে কোচ, সাপোর্ট স্টাফ এবং সমর্থকদের অনেক ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য। কোচও যেমন বললেন, আমরা মরিয়া চেষ্টা করব, এই মরসুমটা ভালো করার জন্য।’ ভিসা সমস্যায় এখনও কলকাতায় আসেননি ক্যাপ্টেন ক্লেটন সিলভা। বর্ষসেরা ফুটবলারও তিনি। তাঁর হয়ে কোচ কুয়াদ্রাত এই পুরস্কার গ্রহণ করেন। এরপর মঞ্চে ডেকে নেওয়া হয় টিমের সাপোর্ট স্টাফ এবং বাকি সদস্যদেরও। সঙ্গে ছিলেন জুনিয়র টিমের ফুটবলাররাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − 6 =