প্রজাতন্ত্র দিবসে বাংলার ট্যাবলোতে এবার মা দুর্গা

এবার বাংলার ট্যাবলোর থিম ও বিষয় ভাবনায় রয়েছে ‘নারী ও তাঁর ক্ষমতায়ন’। আর মা দুর্গা সেই ক্ষমতায়নেরই প্রতীক। আর সেই কারণেই আগামী ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে এবার অংশ নেবে মা দুর্গা আর তাঁর পরিবারও। যেখানে মূলত তুলে ধরা হবে বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসবের কিছু মুহূর্ত, এমনটাই জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসবকে হেরিটেজ তকমা দেয় ইউনেস্কো। ‘ইনট্যানজিবল কালচালার হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি’র স্বীকৃতি পায় দুর্গাপুজো। আর এই স্বীকৃতির উদযাপিত হয়েছে ২০২২ সালে। এরই রেশ ধরে দুর্গাপুজো কার্নিভ্যালের মাধ্যমে হেরিটেজ তকমার উদযাপন এবার প্রজাতন্ত্র দিবসেও।

রাজ্য সরকার সূত্রে খবর, মাটি দিয়ে তৈরি হবে ট্যাবলোর এই মূর্তিগুলি।কী ভাবে মা দুর্গার মূর্তি তৈরি হয়, কী ভাবে তাঁর প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়, কী ভাবে তাঁর চোখ আঁকা হয়, সেই সবটাই ট্যাবলোতে ফুটিয়ে তোলা হবে।মহালয়া থেকে শুরু করে পুজোর প্রতিটি দিন কী ভাবে মায়ের উপসনা করা হয়, তাও তুলে ধরা হবে ট্যাবলোতে। ধর্মীয় আচারের ঊর্ধ্বে উঠে বাংলা যেভাবে দুর্গাপুজোকে শ্রেষ্ঠ উৎসবে পরিণত করেছে  তাও ফুটিয়ে তোলা হবে এই ট্যাবলোতে। একইসঙ্গে এও জানানো হয়েছে, বাংলার এই ট্যাবলোতে থাকবে মহিলা ঢাকি।শঙ্খধ্বনি-উলুধ্বনির মাধ্যমে তুলে ধরা হবে বঙ্গ সংস্কৃতির এক ছবিও।

প্রসঙ্গত, এই ট্যবলো নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে রাজ্য-রাজনীতি সংঘাত সামনে আসে। ২০২২ সালে বাংলার প্রস্তাবিত নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ট্যাবলো বাতিল করে দেয় কেন্দ্র।প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলোর বাংলার বিষয়-ভাবনা বা থিম ছিল ‘নেতাজি ও আজাদ হিন্দ বাহিনী’। নেতাজি ও তাঁর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি অর্থাৎ আইএনএ  এবং বাংলার মনীষীদের অবদানও ছিল ট্যাবলোর থিমের অন্তর্ভুক্ত। এরপরই এই ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও লেখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আমি হতভম্ব এবং আহত। কোনও কারণ বা ব্যাখা ছাড়াই এভাবে বাংলার ট্যাবলো বাদ পড়ায় আমি বিস্মিত হয়েছি।‘ সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এও জানান, ‘বাংলার মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের আচরণে গভীরভাবে ব্যথিত। ট্যাবলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তে অসম্মানিত স্বাধীনতা সংগ্রামীরা।’ এরপরই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, ট্যাবলো নিয়ে কেন্দ্রের যে গাইডলাইন রয়েছে তা না মানায় বাংলার ট্যাবলো বাতিল করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one + ten =