মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরম অপমানজনক মন্তব্যের প্রতিবাদে ৬ এপ্রিল সমস্ত রাজ্য সরকারি অফিসে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতির ডাক সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। এদিকে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে জেলায় জেলায় পালন করা হবে ধিক্কার দিবস, বৃহস্পতিবার এমনটাই জানান সংগ্রামী মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। এরপর ১০ এপ্রিল দিল্লির যন্তর মন্তরে হবে ধর্না। সেদিনই রাষ্ট্রপতি এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে ডেপুটেশন দেওয়া হবে বলেও জানান ভাস্করবাবু। একইসঙ্গে এও জানান, ভবিষ্যতে কালীঘাটের হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে মিছিল করাও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার রেড রোডের ধর্না মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনকে তীব্র কটাক্ষ করে ছিলেন। শহিদ মিনার ময়দান চত্বরে অবস্থানকারী কর্মীদের উদ্দেশে তিনি মন্তব্য করেন, সব চোর ডাকাতরা বসে আছে ওখানে। বৃহস্পতিবারও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যারা ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছেন, তাদের চাকরি হয়েছে চিরকুটে।
এরপরই বৃহস্পতিবার একেবারে গণছুটি নিয়ে সরকারি কর্মীরা শহিদ মিনার ময়দান চত্বরে সমাবেশে শামিল হন। হাওড়া এবং শিয়ালদহ স্টেশন থেকে আসে দুটি বিশাল মিছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের জেরে মিছিল এবং সমাবেশের মেজাজও ছিল এদিন বেশ চড়া। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কীভাবে সরকারি কর্মচারিদের চোর-ডাকাত বলতে পারেন মিছিল থেকে প্রশ্ন তোলেন আন্দোকারীরা। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও চোর চোর স্লোগান ওঠে মিছিল থেকে।
এদিন ময়দানের সমাবেশে ভাষণ দেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী, এসইউসি নেতা চণ্ডীচরণ ভট্টাচার্য, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ আরও অনেকেই। এঁরা প্রত্যেকেই এই আন্দোলনের পাশে থাকার বার্তা দেন।
এদিনের সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মহম্মদ সেলিম জানান, ‘রেড রোডে যে তামাশা চলছে তার প্রতি ধিক্কার জানাতে এসেছি। আদালত বলেছে ডিএ সরকারি কর্মীদের ন্যায অধিকার। কোনও অনুদান নয়।‘ এদিকে বিকাশরঞ্জন আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে জানান, ‘আপনাদের আন্দোলন সফল হবেই।‘
তবে এদিনের বিরোধী দলের সমাবেশকে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক তৃণমূল। রেড রোডের ধরনা মঞ্চ থেকে রামধনু জোট বলে ব্যঙ্গ করা হয় সরকারি কর্মচারিদের অবস্থান আন্দোলনকে।