কলকাতা: ববিতা সরকারের মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট ২১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । বিচারপতির রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিল রাজ্য। সেই মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশই বজায় রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। ওএমআর শিট প্রকাশ না করার আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
তবে তালিকা প্রকাশের পর যদি কোনও শিক্ষকের চাকরি পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন থাকে তাহলে সিঙ্গেল বেঞ্চ আগে তাদের শুনানির সুযোগ দেবে বলে জানাল আদালত। একই সঙ্গে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘পাবলিক সার্ভিস নিয়ে দুর্নীতি হলে কোনও কোর্ট চোখ বুজে থাকতে পারে না। এইক্ষেত্রেও কোর্ট সেটা অস্বীকার করতে পারে না।’
বস্তুত, নিয়োগ দুর্নীতিকে ঘিরে ববিতা সরকারের মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট ২১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । বিচারপতির রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিল রাজ্য। সূত্রের খবর, রাজ্যের সেই আবেদন খারিজ করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকেই বহাল রাখে শীর্ষ আদালত। তারই প্রেক্ষিতে এদিন একাদশ ও দ্বাদশ শিক্ষক নিয়োগের সব ওএমআরশিট প্রকাশের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় কিছু কর্মরত শিক্ষক। তাঁদের বক্তব্য, ওই তালিকা প্রকাশ হলে তাঁদের চাকরি চলে যেতে পারে। এই বিষয়ে আদালত জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত যে স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন (এসএলপি) আছে তার নিষ্পত্তি হওয়ার পরেই তাদের চাকরি নিয়ে পদক্ষেপ করা যাবে। ওএমআর শিট প্রকাশের জন্য এসএসসির তরফে এদিন আদালতে বাড়তি সময় চাওয়া হয়। তারই প্রেক্ষিতে ২১ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২৮ জুলাই পর্যন্ত তালিকা প্রকাশের সময় বাড়াল ডিভিশন বেঞ্চ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতের নির্দেশে প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতার চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। কিন্তু তারপর তাঁরও চাকরি ‘অবৈধ’ হিসেবে প্রমাণিত হওয়ায় বাতিল হয় ববিতার চাকরি। ওই ঘটনায় ফের হাইকোর্টে নতুন মামলা দায়ের করেন ববিতা।
ববিতার আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, ২০১৬ সালে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে সাড়ে ৫ হাজার জন চাকরি পেয়েছিলেন। পরে এই নিয়োগের তদন্তে সিবিআই জানিয়েছিল, ৯০৭টি উত্তরপত্র বা ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই চাকরি করছেন। এরপরই ২০১৬ সালের প্যানেলভুক্ত ও ওয়েটিং লিস্টে থাকা সব চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট আগামী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রকাশ করার জন্য কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।