রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়ে নোটিস ১২ জন উপাচার্যের তরফ থেকে

রাজ্যপাল তথা সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা সিভি আনন্দ বোসকে মানহানি মামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে লেখা এক চিঠি পাঠানো হল প্রাক্তন উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ১২ জন প্রাক্তন উপাচার্যের তরফ থেকে। আচার্যের ৭ সেপ্টেম্বরে একটি বক্তব্যের ভিত্তিতে এই মানহানির মামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে চিঠি বলে সূত্রে খবর।

এদিকে বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন প্রাক্তন উপাচার্যরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওমপ্রকাশ মিশ্র, দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা। তাঁরা জানান, ‘রাজ্যপাল নিজের বক্তব্য়ের মধ্যে দিয়ে উপাচার্যদের সম্পর্কে যা বলেছেন তার প্রতিবাদেই চার পাতার এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।’ শুধু তাই নয়, সেদিনের বক্তব্য়ের প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল ক্ষমা না চাইলে মামলার পথেই হাঁটতে পারেন, সে ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন উপাচার্যরা।

বৃহস্পতিবার ওমপ্রকাশ মিশ্র জানান, ‘উনি বলেছেন আমরা নাকি কোরাপ্ট, আমরা নাকি রাজনৈতিক খেলা খেলছি। কেউ কেউ ছাত্রীদের হেনস্থা করেছে। তাই উনি আমাদের উপাচার্য করছিলেন না। এরপর আমরা চারপাতার আইনি নোটিস পাঠিয়েছি। উনি চূড়ান্ত বাড়াবাড়ি করছেন। বাংলার শিক্ষাকে ধ্বংস করছেন। ওঁনার আর সরকারের ব্যাপার। আমাদের কেন টানছেন এসবের মধ্যে। আইন মেনে তো সবটা করতে হবে। ওনার যদি আইন না পছন্দ হয় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আইন বদল করে নিন। মিডনাইট ড্রামা করেন। উনি ভাবছেন বলে দিলেই হয়ে যাবে। হবে না। ওনাকে বলতে হবে কে দুর্নীতিগ্রস্ত।’

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত প্রাক্তন উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ জানান, ‘আমি ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটির ভিসি ছিলাম। রানি রাসমণি গ্রিন ইউনিভার্সিটির ভাইস চান্সেলার ছিলাম। সেটা টাকা পয়সার জন্য নয়। পলিটিকাল ইস্যু করা অথবা কোনও ছাত্রীকে হেনস্থা করার জন্য উপাচার্য হইনি।’

উপাচার্যরা জানান, জুন মাসের প্রথমে রাজভবন থেকে একটা প্রেস রিলিজ আসে। এক্সটেনশনের আগে সেই প্রেস রিলিজ পান উপাচার্যরা। তাতে লেখা ছিল ২৯ জন উপাচার্যের নাম বিকাশ ভবন থেকে রাজভবনে পাঠানো হয়েছে এক্সটেনশনের জন্য। কিন্তু মাত্র ৩ জনকে এক্সটেনশনকে দেওয়া হয়েছে বা হবে। বাকিদের দেওয়া হবে না।

এদিকে সম্প্রতি এক ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল বলেন, ‘কেন সরকার মনোনীত ভিসিদের নিয়োগ করতে পারিনি জানেন? তাঁরা কেউ দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন, কেউ রাজনীতির খেলা খেলছিলেন, কেউ ছাত্রী হেনস্থা করেছিলেন।’ রাজ্যপাল তথা আচার্যর মুখ থেকে এমন বক্তব্যে স্বভাবতই বিভিন্ন মহলে জোর চর্চা শুরু হয়। এবার তারই প্রতিবাদে মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়ে এই নোটিস প্রাক্তন উপাচার্যদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 − five =