লিঙ্গ পরিচয় নয়, বিচারক হতে যোগ্যতাই শেষ কথা: বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়

নয়াদিল্লি: নারী বা পুরুষের মতো রূপান্তরকামী বা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিরও সমান অধিকার আছে, যোগ্যতা থাকলে বিচারকের আসনে বসার। পেশাগত দক্ষতাই এক্ষেত্রে শেষ কথা, লিঙ্গগত পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ নয়। সমকামী হওয়ার জন্য যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বিচারপতি হিসেবে প্রোমশন পাননি বলে অভিযোগ তুলেছিলেম দিল্লি হাইকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৌরভ কৃপাল। এই বিতর্কের মধ্যেই এমন মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ।
প্রসঙ্গত, মাস কয়েক আগে দিল্লি হাইকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৌরভ কৃপাল অভিযোগ তুলেছিলেন ২০১৭ সালেই বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন তিনি। পেয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রেকমেন্ডেশনও। কিন্তু বিচারপতি হিসেবে প্রোমোশন মেলেনি। কারণ, তিনি সমকামী।
এ নিয়ে বিতর্কর মধ্যেই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, কলেজিয়ামের তরফে যখন প্রার্থীদের বিচারক হওয়ার অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হয়, তা সে হাইকোর্টের হোক বা সুপ্রিম কোর্টের, তখন তাঁদের জীবনের বা সমাজের সমস্ত দিক খতিয়ে বিচার করে দেখার কথা নয়। প্রার্থী যোগ্য কিনা, সেটাই একমাত্র বিচার্য বিষয়।
চন্দ্রচূড়ের কথায়, ‘যে প্রার্থীর (সৌরভ কৃপাল) কথা আপনারা বলছেন, তাঁর সম্পর্কে সমস্ত তথ্য আইবি রিপোর্টেই উল্লেখ করা ছিল। আর ওই রিপোর্ট পাবলিক ডোমেনেই রয়েছে। ফলে তাঁর সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন খোলামেলা ভাবেই সবার সব জানা। ফলে এটি আলাদা করে আদালতের বিচার্য বিষয় ছিল না। অথচ সমস্ত মিডিয়ার কাছে পরিবেশিত হল, বিচারপতি পদের প্রার্থী যেহেতু সমকামী, তাই তাঁকে পদে বসতে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমরা রেজোলিউশনে স্পষ্ট বলেছি, একজন প্রার্থীর যৌন অভিমুখের সঙ্গে বিচারকের উচ্চসাংবিধানিক পদ গ্রহণ করার বা তাঁর সাংবিধানিক অধিকার ভঙ্গ হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।’
যদিও সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের খাতায় কোনও কারণ ছাড়াই ৫ বছর ধরে আটকে রয়েছে সৌরভ কৃপালের প্রোমোশন। এর কারণ হিসেবে অনেকেই বলছেন, দেশের কোনও আদালতের চুড়োয় একজন সমকামী ব্যক্তিকে বসানোর মতো উদারতা দেখাতে পারছে না সরকার। আইন মহলেই এই নিয়ে আপত্তি রয়েছে একাংশের। সৌরভ কৃপাল নিজেও তেমনটাই দাবি করছেন। এই প্রসঙ্গে অনেকেই মনে করিয়ে দিয়েছেন, সদ্যই সমলিঙ্গ বিবাহের অধিকার খারিজ করে রায় ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + 11 =