নির্দল হয়ে জিতে এলে দলে জায়গা নেই, কড়া হুঁশিয়ারি অভিষেকের

‘যাঁরা টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে লড়বেন বলে ভাবছেন, তাঁদের কিন্তু দ্বিতীয়বার ভাবতে হবে।‘ বুধবার এমন ভাষাতেই সতর্ক করতে দেখা গেল তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই প্রসঙ্গে অভিষেক এও বলেন, ‘অনেকেই ভাবেন প্রার্থী না হওয়ায় নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে জিতব।নির্দল হয়ে জিতে আসলে দলে সুযোগ নেই।‘ এরই রেশ টেনে অভিষেক এদিন এও বলেন, ‘আপনাদের একটু দলীয় অনুশাসন মনে করিয়ে দিই। গত পুরসভা ভোটে অনেকে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। অনেকে জিতেছেন। সব জেলায় দেখে নিন গত ১৪ মাসে যারা নির্দল হয়ে জিতেছিল, তারা অনেক দাদার পা ধরেছিল, কিন্তু তারা দলে ফিরতে পারেনি। এটাই দলীয় শৃঙ্খলা।’
মঙ্গলবারের দক্ষিণ দিনাজপুরের দলীয় অধিবেশন থেকে অভিষেক এও জানান,‘প্রার্থী পছন্দ না হলে নির্বাচনী প্রচারে যাব না। বুথে বসব না। জিতে গেলে আবার দল করব অনেকেই ভাবেন। দল যাকে প্রার্থী করবে, কাঁধে করে তাকে বৈতরণী পার করাতে হবে, এটা দলীয় শৃঙ্খলা।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন,‘আমি দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত হারতে রাজি আছি। কিন্তু দলীয় শৃঙ্খলার উপরে কেউ নয়। আমি চার জন প্রধানকে পদত্যাগ করিয়েছি। আমি গ্রামে গেছি। দেখেছি কাজ করেনি ৷’ আর এখানেই অভিষেকের প্রশ্ন, ‘তাহলে সে প্রধান হয়ে আছে কেন ? সে যখন কোনও কিছুই দেখবে না তাহলে প্রধান হয়ে থাকবে কেন?’ এরই রেশ টেনে অভিষেক এও জানান, ‘ওসব আগে হত, এখন আর হবে না। আপনাকে প্রতি বছর পরীক্ষা দিতে হবে ৷ যদি কাজ করেই থাকি, তাহলে পরীক্ষা দেওয়ায় ভয় কি আছে। হয়তো সব সমস্যার সমাধান করতে পারছি না। কিন্তু মানুষের কথা শুনতে অসুবিধা কোথায়।’
তবে তৃণমূলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতে অভিষেক যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তার মালুম পাওয়া গেছে মঙ্গলবারের রাতের সভা থেকেই। মঙ্গলবার রাত্রিবেলা গঙ্গারামপুরের সভা থেকে অভিষেক বলেন, ‘২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস প্রথমবার ক্ষমতায় আসে। মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাতারাতি কিছু বেনোজল দলে ঢুকে পড়ে। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য অন্য পার্টি থেকে এসে একে ধরে তাঁকে ধরে নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখতে চায় তাঁরা। এই বেনোজল গুলোকে চিহ্নিত করে আগামী দিনে পার্টি থেকে বের করে মানুষকে মানুষের পঞ্চায়েত সদস্য দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’
এদিকে অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রায় ব্যালট পেপার নিয়ে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে একাধিক জেলা থেকে। এমনকী, ব্য়ালটে ভোটের কোনও গুরুত্ব নেই বলেও দাবি করছেন দলের একাংশ। এই ঘটনায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ ব্যালটে ভোট নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। কান না দেওয়ার পরামর্শ তিনি। পাশাপাশি অভিষেকের দাবি, ‘জনগণ এবং বুথস্তরের সভাপতিদের প্রস্তাবিত নামগুলি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 1 =