প্রশান্ত কিশোরের সক্রিয় রাজনীতিতে হাতেখড়ি নীতীশ কুমারের হাত ধরেই। সেই প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor) আর নীতীশ কুমারের সম্পর্ক এখন আদায়-কাঁচকলায়। একে অপরের দিকে রীতিমতো কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করছেন তাঁরা।
আসলে দিন দুই আগে প্রশান্ত বলেছিলেন, নীতীশ কুমার ‘পক্ষ’ থেকে ‘বিপক্ষে’ এলেও জাতীয় রাজনীতিতে তার খুব একটা প্রভাব পড়বে না। এটা একটা রাজ্যের ব্যাপার। এই পরিবর্তনেও জাতীয় রাজনীতির সমীকরণ খুব একটা বদলাবে না। তবে যে কেউ চেষ্টা করতেই পারে। বস্তুত, বিরোধী শিবিরে যোগ দেওয়ার পরই নীতীশ যেভাবে নিজেকে জাতীয় স্তরের নেতা হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন, সেটাকে একপ্রকার কটাক্ষই করেছেন তাঁর একসময়ের ছায়াসঙ্গী। তাছাড়া নীতীশের আমলে বিহারে আদৌ কতটা কী উন্নতি হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন ভোটকুশলী।
নিজের একসময়ের সতীর্থের এই কটাক্ষ অবশ্য মুখ বুজে হজম করেননি নীতীশ কুমারও। তিনি আবার পালটা পিকে-কে (PK) ধান্দাবাজ বা ব্যবসায়ী বলে তোপ দেগে দিয়েছেন। নীতীশের বক্তব্য, পিকে একজন ব্যবসায়ী। যখন আমার সঙ্গে ছিল, তখন বলেছিলাম, নিজের পেশা ছেড়ে এসে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করো। কিন্তু ও তাতে রাজি হয়নি। আসলে ও রাজনীতি নিয়ে ব্যবসা করে। ও কী বলল তাতে কিছু যায়-আসে না। এরপরই বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, ‘প্রশান্ত এতকিছু বলছেন মানে নিশ্চয়ই কোনও উদ্দেশ্য আছে। হয়তো ও এবার বিজেপির হয়ে কাজ করবে। বা গোপনে বিজেপিকে সাহায্য করবে।’
এবার তাঁর এই চাঞ্চল্যকর মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন পিকেও। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নীতীশ কুমারের বেশ কিছু ছবি টুইটারে পোস্ট করেন। সেই পোস্টে কোনও ক্যাপশন ছিল না। যদিও পরক্ষণেই সেই পোস্টটি মুছে দেন ভোটকুশলী পিকে।
প্রসঙ্গত, নীতীশের শরিক বদলের পর থেকেই এই দুই প্রাক্তন রাজনৈতিক সঙ্গীর মধ্য একটা চাপা আক্রমণ পর্ব শুরু হয়েছিল। পিকে সেই সময় বলেছিলেন, ‘এক মাস আগেও শাসক দলের সঙ্গে ছিলেন নীতীশ কুমার, কিন্তু এখন বিরোধীদের সঙ্গে। এটা কতটা ভরসাযোগ্য সেটা জনগণ ঠিক করবেন। তবে আমার মনে হয় না বিহারে ক্ষমতার পরিবর্তন কোনওভাবে দেশীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে। এটি রাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে আমার মনে হয়।’
উল্লেখ্য, নীতীশ বেশ কিছুদিন ধরেই জাতীয় স্তরে বৃহত্তর বিরোধী জোট গঠনের চেষ্টায় আছেন। ইতিমধ্যেই রাহুল গান্ধি(Rahul Gandhi), অরবিন্দ কেজরিওয়াল, শরদ পাওয়ারের মতো নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। আসলে নীতীশ বিরোধী শিবিরে ফেরার পর থেকেই নিজেকে বিরোধী শিবিরের মুখ হিসাবে ভাসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পিকে অবশ্য তাঁকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।