আক্রান্ত কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। দিনহাটার বাসন্তীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের গাড়ি লক্ষ্য করে একাধিক বোমা বর্ষণের অভিযোগ। গাড়ি লক্ষ্য করে চলে ইট বৃষ্টিও। এমনকী গুলিও চলে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। আর এই ঘটনার জেরেই রণক্ষেত্রে দিনহাটা।তবে সুরক্ষিত আছেন প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। বোমাবর্ষণের জেরে তিনি গাড়িতেই আটকে পড়েন। এরপর নিরাপত্তারক্ষীরা পরে তাঁকে গাড়ি থেকে বার করেন। এই ঘটনার জেরে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর গাড়ির কাচ ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
এদিকে সূত্রে খবর শনিবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তাঁর দলের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে দলীয় কর্মসূচি নিয়ে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। তখনই বুড়ির হাটে তৃণমূল কংগ্রেসের ও বিজেপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সঙ্গে চলে কালো পতাকা দেখানোর মতো ঘটনাও। এরপরই দুইপক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে চলে বোমাবাজি,গুলিও। রাস্তার দু পাশে থাকা দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে বাধ্য হয়েই বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। এরপরই এলাকার পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে কোচবিহার সহ বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী বুড়িহাটে নিয়ে আসা হয়। এলাকা শান্ত রাখতে মোতায়েন করা হয় বিরাট পুলিশ বাহিনী।
এদিনের এই ঘটনায় বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক সরাসরি তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। নিশীথ প্রামাণিক বলেন, ‘এই ধরনের সংস্কৃতি বাংলার বুকে ছিল না। তবে একটাই কথা বলব, দুষ্কৃতীদের দেখে পালানো নয়। চোখে চোখ রেখে লড়াই করাটাই আমার কাজ। আমি মনে করি সাধারণ মানুষকে সাহস দেওয়ার জন্য, বাংলায় যে ভয়ভীতির পরিবেশ আছে, সেটাকে দূর করার জন্য এটাই করতে হবে।’ এরই পাশাপাশি নিশীথ এও জানান, ‘এটা তো প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা। রাজনৈতিকভাবে লড়াই করে পারছে না। এখন এসব করছে। বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতিটা যা হয়েছে, সাধারণ মানুষ তা মেনে নেবেন না।’ শুধু তৃণমূলই নয়, পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নিশীথ। বলেন, ‘পুলিশ উল্টে আমাদের দিকে টিয়ার গ্যাস ছুড়ে দিচ্ছে। আমাদের লোকের উপর লাঠিচার্জ করা হচ্ছে। অথচ যারা কালো পতাকা দেখাচ্ছে, পাথর বৃষ্টি করছে, বোমা মারছে তাদের প্রতি নমনীয় ব্যবহার করছে।’ শুধু নিশীথ প্রামাণিকই নন, মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপরও আক্রমণ হয় বলে অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে নিশীথের অভিযোগ, ‘পুলিশকে জানিয়েও এখানে এসেছি কিন্তু, পুলিশ কোন ব্যবস্থাই নেয়নি।’
তবে এদিনের এই ঘটনায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর বক্তব্য, ‘জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাছা বাছা দুষ্কৃতী নিয়ে, ৩০-৪০টা গাড়ি নিয়ে ও দিনহাটায় ঢুকেছে। কেন ঢুকল এত গাড়ি নিয়ে? আমাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। পার্টি অফিসের সামনে দাঁড় করানো গাড়িতে ভাঙচুর করা, আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। ওখানে গুলি চালিয়ে, বোমা মেরে ও এখন ভেটাগুড়িতে গিয়ে পথ অবরোধ করছে। নাটক করছে।’
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিকের বাড়ির সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। এরপর বিজেপি পাল্টা মিছিল করে। শুক্রবার দিনহাটার বিধায়ক নিশীথ প্রামানিকের গড় ভেটাগুড়িতে মিছিল করেন।এরপর শনিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের সাংসদ বুড়ির হাটে তার কনভয় নিয়ে গেলে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ।