মহিলা বক্সিংয়ে আরও ২ সোনা, নিখাত জারিন আর লাভলিনার হাতে ধরে বিশ্বাকাশে ফের উড়ল তিরঙ্গা

মহিলা বক্সিংয়ে আরও দুটি সোনা। একটা এল নিখাত জারিনের হাত ধরে, অন্যাটা অনলেন লাভলিনা বর্গোহাইন। এদিন নিখত জারিন সোনা জিতে প্রমাণ করে দিলেন মেরি কমের যোগ্য উত্তরসূরি তিনি। রবিবার নিখাতের আপার কাট, লোয়ার কাট, জ্যাব, হুক মেরে ঘুঁসিতে ভিয়েতনামের বক্সার মাটিতে আছড়ে পড়তেই ফের তিরঙ্গা উড়ল বিশ্বের আকাশে। বিশ্ব জানল, ভারত এখন অপ্রতিদ্বন্দ্বী মহিলা বক্সিংয়ে। শনিবার নীতু ঘাঙ্ঘাস, সুইটি বোরা সোনা এনে দিয়েছিলেন ভারতকে। রবিবার তৃতীয় সোনা দিলেন এনে জারিন। ফাইনালে ভিয়েতনামের গুয়েন থি তামকে ৫-০ ব্যবধানে এদিন হারান জারিন। প্রথম থেকেই বিপক্ষকে চাপে রেখেছিলেন তিনি। থি তাম কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। জারিনের দ্বিতীয় বার সোনা জেতার পথে বাধা হয়ে উঠতে পারেননি তিনি।
একইসঙ্গে জারিন এদিন দ্বিতীয় বার সোনা জিতে এটাও প্রমাণ করলেন, সমাজের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাকে পার করেও বিশ্বমঞ্চে সফল হওয়া যায়। মেরি কমের পর তিনিই দ্বিতীয় ভারতীয় মহিলা, যিনি একাধিক বার বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ জিতলেন। একসময় মেরি কমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন এই জারিন-ই। তখন সেটা ভালো চোখে গ্রহণ করেনি কেউ। কিন্তু সময় বদলেছে, বদলেছে চিত্রনাট্যও। জারিনের এদিনের সোনা জয়ের পর শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেল অপর এক ভারতীয় বক্সার বিজেন্দ্র সিংকে।
জারিন প্রথমে বেছে নিয়েছিলেন অ্যাথলেটিক্স। স্প্রিন্টে রাজ্য চ্যাম্পিয়নও হয়েছেন। তবে কাকার পরামর্শে বক্সিংয়ে আসেন। কাকা সামসামুদ্দিনের দুই ছেলেই ছিলেন বক্সার। ফলে অনুপ্রাণিত হওয়ার জন্য পরিবারের বাইরে অন্য কাউকে দেখার দরকার কোনও দিন পড়েনি। ১৪ বছরেই যুব বিশ্ব বক্সিংয়ে জেতেন তিনি। ২০২২-এ র কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছিলেন জারিন। সারা দেশ থেকে শুভেচ্ছা পাচ্ছেন জারিন। তিনি এখন ভারতীয় মহিলা বক্সিংয়ের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন।
এদিকে রবিবারই নিখাত জারিনের পর দেশকে চতুর্থ সোনা এনে দিলেন লাভলিনা বর্গোহাইন। এদিন ৭৫ কেজি বিভাগের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কেইটলিন অ্যান পার্কারকে উড়িয়ে দিলেন লাভলিনা। অসমের এই বক্সারের পক্ষে ম্যাচের ফল ৫-২। টোকিও অলিম্পিক্সে ওয়েল্টারওয়েট বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন লাভলিনা। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জেতেন এই বক্সার। ২০২২ সালে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতেন লাভলিনা। ২০১৭ ও ২০২১ সালের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জেতেন তিনি। এবার সোনা জিতলেন লাভলিনা। এদিন ফাইনালে শুরুতে সতর্ক ছিলেন লাভলিনা ও পার্কার। দুই বক্সারই পাঞ্চের চেষ্টা করছিলেন কিন্তু কেউই খুব একটা আক্রমণাত্মক হননি। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর সামান্য ব্যবধানে জয়ী হন লাভলিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 5 =