ভূপতিনগর বিস্ফোরণ কাণ্ডে নয়া মোড়, ধূমপানের সময়ই দুর্ঘটনা, দাবি তৃণমূল নেতার স্ত্রীয়ের

ভূপতিনগর: ভূপতিনগর বিস্ফোরণ কাণ্ডে নতুন মোড়। তৃণমূলের বুথ সভাপতির বাড়িতে বাজি তৈরি হত বলে দাবি করেছেন নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী। পুলিশের কাছে দাবি করলেন নিহতর স্ত্রী। বাজি কারখানায় কর্মীদের ধূমপানের সময় দুর্ঘটনা, দাবি নিহত নেতার স্ত্রী। কিন্তু ঝলসানো ৩ দেহ কেন ঘটনাস্থল থেকে দূরে ৩ জায়গায় তার জবাব দিতে পারেননি নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী। সূত্রে খবর, রবিবার ঘটনাস্থলে যাচ্ছে ফরেন্সিক।

এদিক আমজনতার ধারনা, বঙ্গের দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন এসে পড়ায় বোমা বারুদের স্তূপে পরিণত হচ্ছে ভূপতিনগরের মতো বঙ্গের নানা এলাকা। এদিকে শুক্রবার রাতে তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়। ঘটনাস্থল মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর-২ ব্লকের অন্তর্গত ভূপতিনগর থানার  অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়ুয়াবিলা গ্রাম। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে তৃণমূল নেতার বাড়িতে এই বোমা বিস্ফোরণের তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে তার জেরে উড়ে যায় বাড়ির ছাদ। বিস্ফোরণের জেরে মৃত্যু হয় স্থানীয় তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্না ও তাঁর ভাই দেবকুমার মান্না ও প্রতিবেশী বিশ্বজিৎ গায়েনের। এই ঘটনায় কাঁথি সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি তরুণ মাইতি জানান, ‘শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। আমরা চাই ঘটনার প্রকৃত তদন্ত হোক।’

এদিকে শনিবারই এখানেই সভা করে গেছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই ঘটনার জের রয়েছে রবিবারেও। থমথমে সমগ্র ভূপতিনগর। তবে এই ঘটনায় সরব বিরোধী শিবির। ইতিমধ্যেই এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবারের এই বিস্ফোরণের আওয়াজ পৌঁছায় কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান স্থানীয়রা। তাঁরাই এই ঘটনায় গুরুতর আহত সহ আরও কয়েকজনকে স্থানীয় এগরা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে তাঁদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ভূপতিনগর থানার পুলিশ। তবে পুলিশ আসার আগেই তিনজনের দেহ লোপাট হয়ে যায় বলে অভিযোগ। কেউ বা কারা এই তিনটি দেহ ওই এলাকা থেকে অন্যত্র নিয়ে চলে যায় তা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। এরপর শনিবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিমি দূর থেকে তিনজনের দেহ উদ্ধার করা হয়। নজরে আসে এই তিনজনের ঝলসানো দেহ মাদুর দিয়ে ঢাকা। তবে শরীর ও পোশাক দেখেই পরিবারের লোকেরা চিহ্নিত করেন তাঁদের।

এই বিষয়ে জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে,‘আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। এলাকায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।’ স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি জানান, ‘শাসকদলের মদতে পুলিশের সহযোগিতায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দিনের পর দিন অসামাজিক কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হলেও তারা নির্বিকার। প্রশাসন যদি কড়া হাতে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে দিনের পর দিন এই ধরনের অত্যাচার,অশান্তি হতেই থাকবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − 2 =