কলকাতা: অনেক স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে। অথচ সেখানে অতিরিক্ত শিক্ষক রয়েছেন। আবার দেখা যাচ্ছে অনেক স্কুল এমন রয়েছে যেখানে ছাত্রের সংখ্যা বেশি। কিন্তু, পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। এরকম অবস্থা বহু স্কুলের। তারই প্রেক্ষিতে শিক্ষক বদলি ক্ষেত্রে শুক্রবার নতুন গাইডলাইন জারি করল রাজ্য।
উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে রাজ্য সরকার শিক্ষক বদলির নয়া পদ্ধতি চালু করলেও, তা নিয়ে সমস্যা সামনে এসেছে। মূলত পড়ুয়ার ও শিক্ষকের আনুপাতিক অসামঞ্জস্য মেটাতেই দ্রুত নতুন গাইডলাইন প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবারই স্কুল শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশে প্রকাশ করা হল সেই গাইডলাইন। তাতেই স্পষ্ট করা হয়েছে, প্রত্যেক স্কুলে ছাত্রছাত্রীর অনুপাতে শিক্ষক বা শিক্ষিকার সংখ্যা ঠিক রাখতে হবে। প্রতিটি বিষয়ের ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে কথা মাথায় রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে প্রশ্ন, কাদের বদলিতে অগ্রাধিকার?
বলা হচ্ছে, যাঁরা নতুন চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সেই স্কুলে পাঠানো যেতে পারে যেখানে শিক্ষকের সংখ্যা কম। যে সব শিক্ষক বা শিক্ষিকার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, যাঁদের বাড়িতে ছোট সন্তান রয়েছে, যাঁদের অবসরের মাত্র ২ বছর বা তার কম বাকি, তাঁদের বদলির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বদলির ক্ষেত্রেও চেষ্টা হবে জেলার শিক্ষককে সেখানেই রাখার। কোনও জেলার যে স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা বেশি, সেই স্কুলের শিক্ষককে বদলি করা যেতে পারে ওই একই জেলার অন্য স্কুলে, যেখানে শিক্ষকের অভাব রয়েছে। তবে পুরুষ শিক্ষককে মহিলাদের স্কুলে বদলি করা যাবে না।
কোন স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা কম, কোথায় বেশি, সেই সংক্রান্ত তথ্য শিক্ষা দপ্তরে দিতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলার ডিআই-কে।
উল্লেখ্য, বদলি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। কেন শহরাঞ্চলের স্কুলেই বেশিরভাগ শিক্ষকরা বদলি চাইছেন? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে কড়া অবস্থান নেয় কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার সকালেই কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আদালতের পরামর্শ মেনে জারি হতে পারে ওই নির্দেশিকা। এক্ষেত্রে নতুন নির্দেশিকা এলেই জেলা স্কুল পরিদর্শকদের দ্রুত সেই নীতি বাস্তবায়নের জন্য তৈরি থাকতে বলতে শিক্ষা দপ্তরের আইনজীবীকে পরামর্শ দিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সেই মতো প্রকাশ হল নয়া নিয়মাবলী।