বেঙ্গালুরুতে ভারতের প্রথম থ্রি ডি-প্রিন্টেড পোস্ট অফিস ভবনের উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। এবার প্রযুক্তির পথে আরও একধাপ এগিয়ে প্রিন্টার থেকে বেরল আস্ত ডাকঘর! আর এই থ্রিডি ম্যাজিক দেখে রীতিমতো মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নির্মাণশিল্পে নতুন অধ্যায় জুড়ে দেশের প্রথম থ্রিডি প্রিন্টেড ডাকঘর তৈরি হয়েছে বেঙ্গালুরুতে। শুক্রবার শহরের ক্যামব্রিজ লেআউট এলাকায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি ডাকঘরটির উদ্বোধন হয়। এই প্রসঙ্গে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স-এ তিনি লেখেন, ‘বেঙ্গালুরুর ক্যামব্রিজ লেআউট এলাকায় দেশের প্রথম 3D প্রিন্টেড ডাকঘর তৈরি হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এটাই দেশের অগ্রগতির প্রমাণ। এতে নিহিত রয়েছে আত্মনির্ভর ভারতের আত্মা। প্রত্যেক ভারতীয়র জন্য এটা গর্বের বিষয়। যাঁরা এই উদ্যোগ সফল করে তুলেছেন তাঁদের অভিনন্দন।’
Every Indian would be proud to see India's first 3D printed Post Office at Cambridge Layout, Bengaluru. A testament to our nation's innovation and progress, it also embodies the spirit of a self-reliant India. Compliments to those who have worked hard in ensuring the Post… pic.twitter.com/Y4TrW4nEhZ
— Narendra Modi (@narendramodi) August 18, 2023
এদিন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নিদর্শন এই 3D প্রিন্টেড ডাকঘরটি দেশকে উৎসর্গ করেন রেলমন্ত্রী অশ্বীনী বৈষ্ণব। জানা গিয়েছে, ডেডলাইনের আগেই মাত্র ৪৩ দিনে তৈরি হয়েছে এই ভবন। আইআইটি মাদ্রাসের সাহায্যে ডাকঘরটি বানিয়েছে নির্মাণ সংস্থা লারসন অ্যান্ড টুব্রো। এদিন রেলমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবারই বেঙ্গালুরু ভারতের নতুন ছবি তুলে ধরে। আজ যে 3D প্রিন্টেড ডাকঘর আপনারা দেখতে পাচ্ছেন তা ভারতের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রতীক।’
প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, গত নয় বছরে দেশে অনেক নতুন প্রযুক্তির বিকাশ ঘটেছে। 3D-প্রিন্টেড কংক্রিটের ভবনটিও তারই নিদর্শন। ১১০০ বর্গফুটের ভবনটি তৈরি করতে সময় লেগেছে মাত্র ৪৫ দিন, খরচ পড়েছে ২৩ লক্ষ টাকা। ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ভারতের প্রথম 3D-প্রিন্টেড বাড়ির উদ্বোধন করেছিলেন। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি মাদ্রাজের ক্যাম্পাসে ভবনটি তৈরি করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়িগুলি তৈরির ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার সুপারিশ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
3D কংক্রিট প্রিন্টিং কী?
সাদা কাগজে আমরা যেমন লেখা প্রিন্ট করি, তেমনই এই ক্ষেত্রে কম্পিউটারে কোনও ভবনের নকশা দিয়ে, সেই নকশা অনুযায়ী কংক্রিটের কাঠামো প্রিন্ট করা হয়। 3D কংক্রিট প্রিন্টিং-এর ক্ষেত্রে একটি বিশেষ কংক্রিটের মিশ্রণ তৈরি করা হয়। এই মিশ্রণটি যাতে দ্রুত শুকিয়ে যায়, তার জন্য এতে এক বিশেষ ধরনের আঠা মেশানো হয়। এই মিশ্রনটিকে বলা যেতে পারে 3D কংক্রিট প্রিন্টিং-এর কালি। এরপর, ওই মিশ্রনকে যন্ত্রে ঢালা হয়। 3D কংক্রিট প্রিন্টিং যন্ত্রের দুটি অংশ আছে। একটি যন্ত্রে দৈত্যাকার ক্রেনের সাহায্যে প্রিন্টারটিকে আনুভূমিক রাখা হয়। দ্বিতীয় অংশটি হল একটি রোবোটিক হাত। কম্পিউটারে যে নকশা দেওয়া থাকে, রোবোটিক হাতটি থেকে সেই নকশা অনুযায়ী মিশ্রণ বের হয় এবং নকশা মেনে স্থাপত্যটি সংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়ে যায়।